ভিন্ রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললে ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে নিগ্রহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিগ্রহের প্রতিবাদে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে রেড রোডে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাষাকে সম্মান জানিয়ে কুচকাওয়াজ করল উত্তর ২৪ পরগনার ভগবতী দেবী বালিকা বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে এই কুচকাওয়াজ হয়েছে। ছাত্রীদের হাতে ছিল বাংলা-সহ হিন্দি, নেপালি, কামতাপুরী ইত্যাদি লেখা পোস্টার। বিভিন্ন ভাষায় লেখা পোস্টারও ছিল। বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ বাঙালিদের উপর যখন নিগ্রহ চলছে, সেই সময় স্বাধীনতা দিবসে বিভিন্ন ভাষাকে সম্মান জানিয়ে এই কুচকাওয়াজকে একটি বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে।
এ দিন রেড রোডের অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছনোর আগে মুখ ভার হয়ে যায় আকাশের। তার পরে শুরু হয় বৃষ্টি।
বৃষ্টির মধ্যেই চলতে থাকে অনুষ্ঠান। কিছু ক্ষণ পরে অবশ্য বৃষ্টি থেমে যায়। রোদ ওঠে। তবে কুচকাওয়াজে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েকজন পড়ুয়া। তাদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বেরিয়ে এসে বলেন, ‘‘সবাই সুস্থ আছে। একজনের অসুস্থতা একটু বেশি হওয়ায় স্যালাইন দিতে হয়েছিল।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে ‘কন্যাশ্রী’, ‘একতাই সম্প্রীতি’ ইত্যাদি ট্যাবলো প্রদর্শিত হয়। পর্যটন দফতরের উদ্যোগে প্রদর্শিত হয় দুর্গার ট্যাবলো। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে ‘একতাই সম্প্রতি’ ট্যাবলোয় ছিল মন্দির, মসজিদ, গির্জা ইত্যাদির ছবি। তার আগে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ-সহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা হাতে-হাত ধরে হেঁটেছেন। এ ছাড়া, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়েছে।
কলকাতা এবং বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। অনুষ্ঠানে অসামান্য এবং প্রশংসনীয় কাজের জন্য ছ’জন পুলিশ অফিসারকে পুরস্কৃত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন আচমকা অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়ে একটি কুকুর। পুলিশকর্মীরা অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটিকে সেখান থেকে বার করে দেন।