• পড়ুয়া ঠিকঠাক পড়ছে তো? জানতে চেয়ে তরুণী গৃহশিক্ষিকাকে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন বাবা, কান্না চেপে বাড়ি ফিরলেন শিক্ষিকা...
    আজকাল | ১৭ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: নার্সারি পড়ুয়া ও তার মা বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে টিউশন পড়াতে আসা দিদিমনির শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল পড়ুয়ার বাবার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গৃহ শিক্ষিকা ওই পড়ুয়ার বাবার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

     জানা গিয়েছে, শনিবার বেলা দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার লিলুয়া থানা এলাকার গোলবাড়িতে। নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নার্সারি ক্লাসের এক পড়ুয়াকে টিউশন পড়াতে এসেছিলেন তার তরুণী দিদিমণি। সেই সময় ওই পড়ুয়া এবং তার মা বাড়িতে কেউই ছিলেন না। পড়ুয়া বাড়ি নেই দেখে যখন দিদিমণি বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁকে বলেন অপেক্ষা করতে। পড়ুয়া এবং তার মা এখুনি চলে আসবে। পাশাপাশি তিনি তাঁর সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে কিছু বলতে চান। এই কথা শুনে দিদিমণি যখন ঘরে ঢোকেন তখন কিছু সময় পর জোর করে ঘরের দরজা বন্ধ করে পড়ুয়ার বাবা ওই দিদিমণির শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। এমনকী, সেই কথা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও সে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর হতভম্ব তরুণী কান্না চেপে বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়ি ফিরে এসে তিনি তাঁর মাসিকে সবকিছু খুলে বলেন। সিদ্ধান্ত নেন থানায় অভিযোগ দায়ের করার। 

    পেশায় ভ্যানচালক অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এরপর লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহশিক্ষিকা তরুণী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লিলুয়া থানার পুলিশ। নির্যাতিতার মা বলেন, 'আমি সিঙ্গল মাদার। এই কারণে আমি মেয়ের পড়ার খরচ টানতে পারি না। সেই কারণে মেয়ে টিউশনি করে। এদিন মেয়ে টিউশন পড়াতে গিয়েছিল। সেই সময় আমি কাজে গিয়েছিলাম। মেয়ে মাসির কাছে অভিযোগ করে ঘরে পড়ুয়া না থাকার সুযোগ নিয়ে তার বাবা ঘরের ভিতর বসিয়ে রেখে মেয়ের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করেছে। এই আচরণ দেখে চিৎকার করে মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। অভিযুক্ত হুমকি দেয়, চিৎকার-চেঁচামেচি করলে মেয়ের ক্ষতি হবে। গোলবাড়ির শনি মন্দির বাসস্ট্যান্ডের সামনে ওরা ভাড়া থাকে। আমি লিলুয়া থানা এলাকার গোলবাড়ি ভট্টনগরে বাপের বাড়িতে থাকি।' এদিকে, নির্যাতিতা তরুণী বলেন, 'আমি এদিন সকালে নার্সারি স্কুলের এক স্টুডেন্টকে পড়াতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি স্টুডেন্ট এবং তার মা নেই। তার বাবা সেখানে রয়েছে। কখন আসবে জিজ্ঞাসা করায় সেই স্টুডেন্টের বাবা জানান এক্ষুনি চলে আসবে। কিছুক্ষণ বসতে অনুরোধ করেন তিনি। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আবার যখন জিজ্ঞাসা করলাম কখন তারা আসবে তখন তিনি বলেন যে একটু বাদেই চলে আসবে। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর যখন কেউ আসেনি তখন বেরিয়ে আসতে চাইছিলাম। কিন্তু তিনি আসতে দিচ্ছিলেন না। দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এরপর আমাকে জবরদস্তি করছিলেন। তারপর আমার সাথে অশ্লীল আচরণ করেন। এই ঘটনা কাউকে জানালে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।' এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

    সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল এলাকায় ছাত্রকে পড়াতে গিয়ে তার বাবার কাছেই শ্লীলতাহানির শিকার হন এক গৃহশিক্ষিকা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। জানা গিয়েছিল ওই গৃহশিক্ষিকা প্রতিদিনের মতো তাঁর দুই পড়ুয়াকে পড়াতে তাদের বাড়ি যান। সেইসময় গৃহকর্ত্রী বাড়ি ছিলেন না। অভিযোগ, এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে শিক্ষিকার সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন ওই পড়ুয়াদের বাবা। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও এরপর চেঁচামেচি করতে থাকেন গৃহশিক্ষিকা। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। গৃহ শিক্ষিকার মুখে সব কিছু শুনে তাঁরা বেধড়ক মারধর করেন অভিযুক্তকে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল যে বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটেছিল সেই বাড়ির দুই ভাইকে গত চার বছর ধরে পড়িয়ে আসছিলেন ওই গৃহশিক্ষিকা। ঘটনার দিন বাড়ির কর্ত্রী বা পড়ুয়াদের মা শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে স্ত্রী বা কেউ না থাকার সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে দুই পড়ুয়ার বাবা ওই গৃহশিক্ষিকার সঙ্গে জবরদস্তি করতে গিয়েছিলেন।
  • Link to this news (আজকাল)