• বাজারেও জল, বন্ধ বহু দোকান, মাচায় বসে চলছে ব্যবসা
    আনন্দবাজার | ১৭ আগস্ট ২০২৫
  • বৃষ্টি কমেছে। আকাশে শরতের মেঘ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু জমা জলের কারণে গাইঘাটা-সহ বনগাঁ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি কমছে না। কারণ, জমা জল সরছে খুবই ধীরে। ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষেরা এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। এর প্রভাব পড়ছে স্থানীয় অর্থনীতিতে। বহু ব্যবসায়ী দোকানই খুলতে পারছেন না।

    এ বারে অতিবৃষ্টির জেরে এবং ইছামতী নদীর জল উপচে এই পরিস্থিতি হয়েছে মহকুমায়। গাইঘাটার সুটিয়া, রামনগর এবং ঝাউডাঙা পঞ্চায়েত এলাকার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গাইঘাটায় শনিবার পর্যন্ত ২৪টি ত্রাণ শিবির চলেছে। সেখানে প্রায় ১২০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ঘরবাড়ি, রাস্তা, খেতের পাশাপাশি হাটবাজারও জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। বেড়িগোপালপুর বাজারের একদিকে রামনগর রোডে হাঁটুজল জমে রয়েছে। তরণীপুর সেতুর দিকে সেই জল প্রায় বুকসমান। রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধ বহু দোকান বন্ধ। দোকানেও জল ঢুকে গিয়েছে বলে আক্ষেপ ব্যবসায়ীদের। এই অবস্থায় সংসার চালাতে জলের মধ্যে মাচায় বসে মাছ, আলু বা আনাজ বিক্রি চলছে। হাঁটুজলে দাঁড়িয়েই চলছে কেনাকাটা।

    দোকানিরা জানান, প্রায় এক মাস ধরে এই অবস্থা। দোকানে জল ঢুকে মালপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গুদামে বিষধর সাপও ঢুকছে। ক্রেতারা জানান, প্রতি বছরই জল ওঠে বাজারে। তবে এ বছর এক মাস আগে থেকেই জল-যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। চাষেও ক্ষতি হওয়ায় বিডিও নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘বাংলা শস্যবিমা প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’

    ভুক্তভোগীরা ইছামতী সংস্কারের দাবি তুলছেন বার বার। তাঁরা জানান, ইছামতীতে স্রোত না থাকার কারণেই প্রতি বছর এই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। নদী দিয়ে জল নামছে না। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘ওই এলাকায় ইছামতী রাজ্য সরকারের অধীন। রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) দিলে নদী সংস্কার করে দেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস পাল্টা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ইছামতী সংস্কারের বিষয়ে উদাসীন। রাজ্য সরকারই নদী সংস্কারে পদক্ষেপ করছে।’’

    বনগাঁ শহরের মতিগঞ্জের হাটেও ইছামতীর জল ঢুকেছে। দোকানপাট ডুবে গিয়েছে। নির্দিষ্ট স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা হাট সরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা বনগাঁ-বাগদা সড়কের দু’পাশে পসরা নিয়ে বসছেন। তাঁরাও ইছামতী সংস্কারের দাবি তুলেছেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)