• ক্ষতিগ্রস্ত নতুন রিংবাঁধ, ঠিকাদার এবং সেচদপ্তরের কর্মীদের তাড়া গ্রামবাসীর
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: ভূতনির পশ্চিম রতনপুরে নদী ভাঙনে ভেঙে গেল নবনির্মিত রিংবাঁধ। বন্যার আশঙ্কায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। এদিকে বাঁধ মেরামতির কাজ নিয়ে ক্ষোভ এতটাই বেড়েছে, ঠিকাদার ও সেচদপ্তরের কর্মীদের তাড়া করলেন ভূতনির ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা। পরবর্তীতে পুলিসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। গঙ্গা ও ফুলহারের জলস্তর অনেকটা কমে যাওয়ায় আপাতত স্বস্তি ফিরেছে এলাকায়। তবে, ফের জল বাড়লেই ঢুকবে ভূতনিতে। অন্যদিকে, রিংবাঁধে থাকা দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যেতে তৎপর প্রশাসন। কিন্ত দুর্গতরা সেখানে যেতে নারাজ।

    রতুয়া ১ ব্লকের পশ্চিম রতনপুর গ্রামে প্রায় এক মাস ধরে ভাঙন চলছে। সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে বালির বস্তা ও বাঁশের খাঁচা দিয়ে কাজ করা হলেও সব নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। এর মধ্যেই নদী এসে পৌঁছেছিল ভূতনির নবনির্বিত রিংবাঁধের একদম কাছে। এদিন সকাল থেকেই নদী তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। যার ফলে নবনির্মিত রিংবাঁধের কিছু অংশ তলিয়ে  গিয়েছে। ফলে এখন একেবারে বাঁধহীন গোটা এলাকা। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পরে যায়। ভূতনির বাসিন্দারা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ করা ঠিকাদারের লোকজন ও সেচদপ্তরের কর্মীদের সঙ্গে বচসার পর ধাক্কাধাক্কি হয়। তারপরেই ক্ষিপ্ত জনতা তাড়া করে তাঁদের। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিস এসে বাসিন্দাদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভূতনির বাসিন্দা আবু তাহিরের অভিযোগ, একমাস ধরে কাজ করলেও ভাঙন রুখতে পারেননি ঠিকাদার। শুধু লক্ষ লক্ষ বস্তা ফেলে বিল তৈরি করা হচ্ছে। আসলে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। তাই ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা কাজ আটকে দিয়েছিলেন। তবে, কাউকে ধাক্কাধাক্কি বা তাড়া করা হয়নি।

    গঙ্গা নদীর জলস্তর কম থাকায় সংরক্ষিত এলাকায় জল ঢোকার সম্ভাবনা এখন নেই বলেই জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে বালির বস্তা দিয়ে জোরকদমে চলছে মেরামতির কাজ। অন্যদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত রিংবাঁধের উপর বাস করছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক দুর্গত। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে তাঁদের। 

    বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা স্থানীয় বাসিন্দা রামলাল চৌধুরী বলেন, গঙ্গা নদীর জল কমে যাওয়ায় স্বস্তি রয়েছে। তবে, জল বাড়লেই পরিস্থিতি পাল্টে ভূতনির বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। প্রশাসন কয়েকবার ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও যেতে চাইছেন না বাঁধে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা। জল বৃদ্ধি হলে বাঁধ ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

    মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ঘটনাস্থলে রতুয়া এক ব্লকের বিডিও এবং এসডিও রয়েছেন। তাঁরা বাঁধে থাকা দুর্গতদের ত্রাণকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কয়েকশো দুর্গতকে সূর্যাপুরের ত্রাণকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রশাসন ভাঙন রোধে সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে এবং দুর্গতদের পাশে রয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)