নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ পুরসভার উপপুরপ্রশাসক অরিন্দম সরকার ও বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত। শহরে জমাজল নিয়ে বিবাদের পর এবার পুকুর ভরাট নিয়ে তাঁদের মধ্যে জোর বিবাদ। বিধায়ক অনুগামীদের অভিযোগ, উপপুরপ্রশাসক বাণিজ্যিক নির্মাণের উদ্দেশ্যে পুকুর ভরাট করছেন। পাল্টা উপপুরপ্রশাসকের বক্তব্য, একটা ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। উল্টে বিধায়কের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এনেছেন উপপুরপ্রশাসক। বিধায়ক অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। শাসকদলের দুই নেতার আকচাআকচিতে সরগরম রায়গঞ্জের রাজনীতি।
রায়গঞ্জ শহরের বিদ্রোহী মোড় লাগোয়া জিতেন্দ্র রাম বক্সির প্রায় ২০০ বছরের পুরনো পুকুরটি রাতের বেলা মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিধায়কের অনুগামী হিসেবে পরিচিত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, উপপুরপ্রশাসকের অঙ্গুলিহেলনেই শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা পুকুরটি বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। আর এই অভিযোগ ঘিরে রবিবার বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর বিরুদ্ধে সরব হন অরিন্দম। তাঁর দাবি, দু-এক বছর নয়, বাম আমলে বিদ্রোহী মোড় এলাকার জমিটি বাণিজ্যিক বাস্তুজমি হিসেবে চিহ্নিত। যার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। জমিটি কিনেছেন কিষান আগরওয়াল। তিনি সম্প্রতি আমার দ্বারস্থ হয়ে জানিয়েছেন, স্থানীয় একটি ক্লাব তাঁর কাছে টাকা দাবি করে। অরিন্দমের অভিযোগ, বিধায়ক ওই ক্লাবের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমার রাজনৈতিক ইমেজ নষ্টের চেষ্টা করছেন।
উপপুরপ্রশাসকের দাবি, বিধায়ক নিজেই পুকুর ভরাটে সাহায্য করেছেন একাধিক জায়গায়। বিধায়ক উকিলপাড়ায় একটি পুকুর ভরাটের জন্য এনওসি দিয়েছেন ওই পুকুরের মালিককে। আমাদের পুরসভা দেয়নি। পাশাপাশি বিধায়কের একটি ওয়ার্কশপের জমি এখনও সরকারি কাগজপত্রে পুকুর হিসেবে রয়েছে।
অরিন্দমের যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে বিধায়ক বলেন, উনি এত কথা বলছেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানাচ্ছেন না কেন? উকিলপাড়ার পুকুর প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, আমি কোনও এনওসি দিইনি। আমি আমার অফিসিয়াল লেটারপ্যাডে জমির চরিত্রের ব্যাপারে খতিয়ে দেখার জন্য ভূমিদপ্তরকে বলেছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ আগস্ট শহরে বৃষ্টির জল জমাকে কেন্দ্র করে বিধায়কের সঙ্গে উপপুরপ্রশাসকের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। নিকাশিনালা নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় সরব হন বিধায়ক। এরপরই পুরসভার উপপুরপ্রশাসক অরিন্দম সরকার বিধায়কের বিরুদ্ধে সরব হন। সেই রেশ ধরেই শাসকদলের দুই নেতার দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হল। এই দ্বন্দ্ব কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।