• ডুডুয়া নদীতে নেই সেতু, বর্ষায় পড়ুয়ার উপস্থিতি কমছে পূর্ব মল্লিকপাড়া স্কুলে
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: নদীতে জল বাড়লে নৌকা টলমল করে। ভয়ে তাই ধূপগুড়ির পূর্ব মল্লিকপাড়া স্কুলের অনেক পড়ুয়ারই স্কুলে যাওয়া হয় না। এই বন্দিদশা ঘুচবে কবে! সেই দিকেই তাকিয়ে ধূপগুড়ি ও ফালাকাটা ব্লকের দু’টি গ্রাম। 

    সংশ্লিষ্ট দুই ব্লকের মধ্যে দিয়ে সীমান্ত রেখা টেনে দিয়েছে ডুডুয়া নদী। নদীর একদিকে ফালাকাটা ব্লকের ধনীরামপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত। এই এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী সাঁকোয়াঝোরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব মল্লিকপাড়া স্কুলে পড়ে‌। নদী পারাপার করার জন্য বহু বছর আগে এগিয়ে এসেছিলেন সুমেশচন্দ্র রায় (সাধু) নামে এক ব্যক্তি। তাঁর উদ্যোগেই নদীতে করা হয়েছিল বাঁশের সাঁকো। বর্তমানে জায়গাটি সাধুর ঘাট নামে পরিচিত। সাধু আজ বেঁচে নেই।  প্রতিবছর বর্ষায় বাঁশের সাঁকো জলের স্রোতে ভেসে গেলে নদীতে নৌকা নামান তাঁর ছেলে সুশেন রায়। কিন্তু এই নৌকায় উঠলেই বুঁক কাঁপা শুরু হয় মামনি রায়, সবিতা পারভীনের মতো বহু পড়ুয়ার। ঘুরপথে স্কুলে যেতে হলে প্রায় ১০ -১২ কিমি অতিক্রম করতে হয়। তাই বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে অনেক পড়ুয়াই স্কুলে যেতে পারে না। যারা স্কুলে যায়, নৌকায় উঠে তাদের বুক কাঁপা শুরু হয়। 

    শুধু যে পড়ুয়ারা, তা নয়। সাঁকোয়াঝোরার অনেক কৃষকের কৃষিজমি রয়েছে নদীর উল্টো পারে ফালাকাটা ব্লকে। তাঁরাও সমস্যায় পড়েন। পূর্ব মল্লিকপাড়া স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী অনুপমা রায়, বর্ণালী রায় বলে, নৌকায় উঠতে ভয় লাগে। কখন কী হয় জনি না। জল বাড়লে নৌকা দুলতে থাকে। অনেকেই তাই স্কুলে যায় না। একই কথা মাঝি সুশেন রায়ের। তিনি বলেন, অনেক পড়ুয়া‌ই যাতায়াত করে। কিন্তু খুব বেশি বৃষ্টি হলে ডুডুয়া নদীতে জল বাড়লে তখন নৌকা টলমল করে।। সেই দিনগুলিতে পড়ুয়ারা স্কুলে যেতে চায় না। 

    বর্ষাকালে তাই স্কুলে পড়ুয়ার হাজিরা কম হয়, স্বীকার করে নিয়ে পূর্ব মল্লিকপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতকুমার দে বলেন, নদীতে জল বাড়লে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সন্তানদের স্কুলে পাঠান না অভিভাবকরা। তাই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কমে। তবে পরীক্ষা থাকলে বুকে আতঙ্ক নিয়ে কেউ কেউ নৌকায় চাপে। বাকিরা ১০-১২ কিমি রাস্তা ঘুরে স্কুলে আসে। 

    ধূপগুড়ির বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা নির্মলচন্দ্র রায় বলেন, ব্লকে বেশ কয়েকটি বড় সেতু সাম্প্রতিক সময়ে হয়েছে। ডুডুয়া নদীর উপর সেতুর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা রয়েছে আমাদের।   সাধুর ঘাটে ডুডুয়া নদী পারাপারে নৌকাই ভরসা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)