• পাঁচ দিন পর খুলে গেল কালিম্পং, সিকিমের লাইফ লাইন এনএইচ ১০
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: টানা পাঁচদিন পর চালু কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন। রবিবার বিকেলে সংশ্লিষ্ট ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ধসের জেরে দু’সপ্তাহে পরপর তিনবার বন্ধ হয়েছে এই মহাসড়ক। এতে ব্যাপক লোকসান হয়েছে বলে আশঙ্কা। পুজোর মুখে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পর্যটন ব্যবসায়ী, কালিম্পং ও সিকিম পাহাড়ের পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের আশঙ্কা, ফের ভারী বৃষ্টি হলে বিগড়ে যেতে পারে সড়ক। তাতে পাহাড়ের অর্থনীতিতে জোর ধাক্কা লাগতে পারে। 

    দু’দিন ধরে পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টির দাপট নেই। এদিন দিনভর রোদ ঝলমলে আবহাওয়া ছিল। দুপুরের আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টি হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে এদিন কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক খুলে দিয়েছে এনএইচআইডিসিএল। পাহাড়ের উঁচু অংশ থেকে নেমে আসা বোল্ডার, মাটি, গাছ রাস্তা থেকে সরিয়েছে। আবার কিছু জায়গায় পাহাড় কেটে নতুন রাস্তা তৈরির কাজ অনেকটাই শেষ করেছে। কালিম্পংয়ের পুলিস সুপার শ্রীহরি পান্ডে বলেন, এনএইচআইডিসিএল রাস্তাটি খুলে দিয়েছে। সব ধরনের যানবাহন রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করছে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে রাস্তাটিতে ট্রাফিক পুলিস মোতায়েন রয়েছে। 

    সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক চালু হলেও তার ক্ষত পুরোপুরিভাবে স্বাভাবিক হয়নি। এই সড়কের একদিকে পাহাড়, আরএক দিকে তিস্তা নদী। পাহাড়ে ভারী বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদী ফুলেফেঁপে উঠছে। নদীর জলস্তর নামার সময় শ্বেতীঝোরা ও ২৯ মাইলে রাস্তায় ফাটল ধরেছে। ইতিমধ্যেই তিস্তার গর্ভে চাপা পড়ছে ফাটল  ধরা অংশ। স্থানীয়দের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হলেও শ্বেতীঝোরা ও ২৯ মাইলে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় ভারী বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে পারে। তাই বিপদের আশঙ্কা মাথায় নিয়েই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। 

    এদিকে, আর এক মাস পরই বাঙালির মেগা উৎসব দুর্গাপুজো। এজন্য পাহাড় ও সমতল সর্বত্র পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরাও বাজার ধরতে আসরে নেমেছেন। কিন্তু দু’সপ্তাহে প্রায় তিনবার বন্ধ হয়েছে সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩-৮,  ৯-১১ এবং ১২-১৭ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ছিল রাস্তাটি। সেই সময় শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে ঘুরপথে যোগাযোগ করতে হয়েছে। 

    স্থানীয়রা বলেন, বৃষ্টি, ধস ও নদীর ভাঙনের জেরে রাস্তাটি বারবার বন্ধ হওয়ায় কালিম্পং ও সিকিমের পর্যটন ব্যবসা মার খাচ্ছে। গাড়ি ও হোটেল ব্যবসায় প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া পাহাড়ে পুজোর প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ডেকরেটার ও মৃৎশিল্পীরা বেকায়দায় পড়ছেন। ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক স্থায়ীভাবে মেরামত না হলে পর্যটন শিল্প সহ কোনও ব্যবসার সমস্যা মিটবে না। এবার এখনও পুজোর ব্যবসা জমেনি। আবহাওয়া অনুকূল না হলে পুজোতে পর্যটন ব্যবসায় লোকসান হতে পারে। তাই রাস্তাটি স্থায়ীভাবে মেরামত করার দাবিতে এনএইচআইডিসিএল’কে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)