• মশা মারতে ড্রোন ‘দাগবে’ পুরসভা
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: এক সপ্তাহে শিলিগুড়িতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০০ মিলিমিটারের বেশি। যার জেরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গুর বাহক মশার ‘ব্রিডিং স্পর্ট’ বা আঁতুড়ঘর তৈরির আশঙ্কা। পুজোর মুখে এনিয়ে উদ্বিগ্ন ওয়াকিবহল মহল। তাই মশার আঁতুড়ঘরের খোঁজে শহরে ড্রোন উড়াবে পুরসভা। তারা প্রশাসনিক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা থানাগুলিকে বাজেয়াপ্ত গাড়ি শেডের নীচে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। যাতে গাড়িগুলিতে বৃষ্টির জল না জমে। 

    দু’দিন ধরে শিলিগুড়িতে বৃষ্টি নেই। রবিবার দুপুরের পরে আকাশে মেঘ জমলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু গত সাতদিনে এখানে বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড, ৩১৩.৫ মিলিমিটার। এরমধ্যে ১৪৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে গত ১৩ আগস্ট। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকার খাল, নালা, ডোবা জলে টইটম্বুর। পাঁচিল তুলে ঘেরা দেওয়া অব্যবহৃত জমি, পার্ক, নির্মীয়মাণ বিল্ডিং, বিভিন্ন মার্কেট কমপ্লেক্স, শপিংমল, আবাসনের ছাদে পরিত্যক্ত কৌটো, টব, জ্যারিকেন প্রভৃতিতে জল জমেছে। 

    সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলিতেই ডেঙ্গুর বাহক মশা এডিস বংশ বিস্তার করতে পারে বলে আশঙ্কা। এনিয়েই নড়েচড়ে বসেছে পুরসভা। এজন্য তারা ভেক্টর কন্ট্রোল টিমকে আরও বেশি তৎপর করেছে। কিন্তু কিছু আবাসনে সার্ভের জন্য পুরসভার আশাকর্মী ও ভেক্টর কন্ট্রোল টিমর সদস্যদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্তের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি আবাসনে সার্ভে করতে গিয়ে দু’জন আশাকর্মী হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ। 

    পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য বলেন, ডেঙ্গু দমনে বাড়ি  বাড়ি সার্ভে করে মশার আঁতুড়ঘর চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তবে গত কয়েকদিনে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে কিছু জায়গায় জল জমেছে। তাই মশার আঁতুড়ঘরের খোঁজে ড্রোনে নজরদারি চালানো হবে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। শীঘ্রই এমন অভিযানে নামা হবে। তবে শহরে স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্তা করার ঘটনা কমেছে। এবার একটি আবাসনের এক মহিলা পুরসভার দুই মহিলা কর্মীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে। এখন আইন আইনের পথে চলবে। 

    এদিকে, শহর সংলগ্ন বিভিন্ন থানায় বাজেয়াপ্ত গাড়ির মধ্যে বৃষ্টির জল জমে মশার আঁতুড়ঘর তৈরির আশঙ্কা থাকে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য বলেন, কয়েকদিন আগে পুলিসের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। প্রতিটি থানাকে বাজেয়াপ্ত গাড়ি শেডের নীচে রাখার কিংবা ত্রিপল দিয়ে ঢাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপের বাঁশের মাথা বালি দিয়ে বন্ধ করতে বলা হয়েছে। তবে এবার এখানে ডেঙ্গুর দাপট অনেকটাই কম। এ বছর এখন পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন। তা হলেও কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না।
  • Link to this news (বর্তমান)