• আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন কোচবিহারের রাজা, ২১৫ বছরে চাপগড়ের বসুনিয়া পরিবারের পুজো
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • সোমনাথ চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: সালটা ছিল ১৮১০। সেই সময় কোচবিহারের রাজা প্রাণনারায়ণ রংপুর থেকে প্রতিমা নিয়ে যাচ্ছিলেন কোচবিহারের দিকে। হঠাৎ করেই শুরু হয়ে যায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। রাজা সেই সময় চাপগড় পরগনার চিলা রায়ের গড়ে আসেন। যেটি বর্তমানে ময়নাগুড়ির আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের চাপগড় নামে পরিচিত। এক সময় কোচবিহারের রাজবাড়িতে কাজ করতেন সেই এলাকার বাসিন্দা ধনবর বসুনিয়া। তিনি রাজাকে আতিথ্য গ্রহণের অনুরোধ জানান। আর সে বছর বসুনিয়া বাড়িতেই হয় দুর্গাপুজো। এরপর থেকে বংশ পরম্পরায় বসুনিয়া পরিবার এই পুজো করে আসছে। এবার ২১৫তম বর্ষের এই পুজোর প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হল রবিবার। নিয়ম রীতি মেনে কাদা খেলার মধ্যদিয়ে শুরু হল প্রতিমা গড়ার কাজ।

    রবিবার কাদা খেলায় অংশগ্রহণ করে কচিকাঁচারা। তাদের কাদা খেলার পর সেই মাটি দিয়ে শুরু হবে মূর্তি তৈরির কাজ। বসুনিয়া বাড়ির প্রতিমাকে ঘরের মেয়ে হিসেবে পুজো করা হয়। এখনও মায়ের মূর্তিতে থাকে ঘরের মেয়ের সাজসজ্জা। এই মূর্তি অন্যান্য দুর্গা প্রতিমার মতো হয় না। বসুনিয়া বাড়ির দুর্গা প্রতিমায় থাকে মঙ্গোলীয় জনজাতির ছাপ। 

    বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন সুনীল বসুনিয়া। তিনি বলেন, এখানে আমরা মাকে নিজের ঘরের মেয়ে হিসেবে পুজো করি। নবমীতে হয় মাত্রা পুজো এবং দশমীতে হয় যাত্রা পুজো। মাত্রা ও যাত্রা পুজোর দিন আমরা কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিকে ফল দিয়ে পুজো করি। এরপর সেটা দিয়ে কৃষিকাজ শুরু হয়। আমাদের এখানে পুজোর সময় প্রচুর লোক আসে। ভিড়ে দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত কম হয়ে যায়। এটা বহু প্রাচীন পুজো। কোচবিহারের রাজা প্রাণনারায়ণের হাত ধরেই এই পুজোর সূচনা। আমাদের বংশ পরম্পরায় এই পুজো হয়ে আসছে। যে সময় কোচবিহারের রাজা আমাদের পূর্বপুরুষের আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন সেই সময় এখানে পুজো শুরু হয়েছিল। সেই সময় রাজবাড়িতে হয়েছিল ঘট পুজো। রীতি অনুযায়ী জন্মাষ্টমীর পরের দিন  আমাদের কাদা খেলা হয়। সেই মাটি দিয়েই মায়ের মূর্তি লেপন করা হবে।   বসুনিয়া বাড়িতে নিয়ম মেনে হল কাদাখেলা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)