জন্ম সার্টিফিকেটের জন্য ৩০০ টাকা, কাঠগড়ায় রামপুরহাটের দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত
বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: শিশুদের জন্ম সার্টিফিকেট নিতে গেলে দিতে হচ্ছে টাকা। নিয়মানুযায়ী জন্ম সার্টিফিকেট বিনামূল্যে দেওয়ার কথা। তা সত্ত্বেও রামপুরহাট ১ ব্লকের দখলবাটি পঞ্চায়েত সার্টিফিকেট পিছু ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েতের নামে রসিদ ছাপিয়ে সেই টাকা তোলা হচ্ছে। যদিও সিল মারা হলেও সরকারি ছাপ নেই। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা পড়ার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবে টাকা নেওয়ায় বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের সরবিনা বিবিকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, অফিসে আসুন। ফোনে এসব বিষয় নিয়ে বলা ঠিক হবে না। বসে আলোচনা করে বলাটাই ঠিক হবে। একইভাবে পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ বিশ্বজিৎ দাস পোদ্দার বলেন, অফিসে আসুন। আমরা সবাই মিলে বলে দেব। ফোনে সব কথা বলা উচিত নয়। যদিও মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে বলেন, এভাবে তো টাকা নিতে পারে না। বিডিওকে খতিয়ে দেখার জন্য বলছি। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল দখলবাটি পঞ্চায়েতে। মেডিক্যালকে কেন্দ্র করে এখানে প্রচুর নার্সিংহোম গজিয়ে উঠেছে। সেগুলিও এই পঞ্চায়েত এলাকায়। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিনশোর বেশি শিশু জন্মগ্রহণ করে। নিয়মানুযায়ী, শিশু জন্মের ২১ দিনের মাথায় বার্থ সার্টিফিকেট পেতে অভিভাবকদের দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবেদন করতে হয়। কিন্তু অভিযোগ, সার্টিফিকেট দিতে ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে পঞ্চায়েত। টাকার বিনিময়ে রসিদ দেওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তাতে সরকারের কোনও কিছুই উল্লেখ নেই। আবেদনের সঙ্গেই টাকা নিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি ব্লক প্রশাসনের কাছে সেই রসিদ সহ অভিযোগ জমা পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই নিয়ে জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। তাতে সৌমেন মণ্ডল নামে একজন লিখছেন, সার্টিফিকেট ডিজিট্যাল করাতেও ৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। আগে যেখানে ৫০ টাকা করে নিত। অনেকেই উল্লেখ করেছেন, যদি গড়ে ৩০০ জনের কাছে থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয় তাহলে দিনে ৯০ হাজার টাকা। মাসে ২,৭০০,০০০ টাকা আয় করছে পঞ্চায়েত। এই টাকা পঞ্চায়েত কোন খাতে খরচ করছে? বিদ্যুৎ সিংহ নামে একজন লিখেছেন, এটা আজকের ঘটনা নয়, অনেকদিন থেকেই এভাবে টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন জানে না এমনটা হতে পারে না। অন্য এক পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বলেন, জন্ম সার্টিফিকেটের জন্য কোনও টাকা লাগার কথা নয়। আবেদনের ভিত্তিতে অনলাইনে সার্টিফিকেট ইস্যু করবে পঞ্চায়েত। এক্ষেত্রে কোনও পঞ্চায়েত ৫০ বা ১০০ টাকা করে নেয়। কিন্তু ৩০০ টাকা অত্যধিক হয়ে যাচ্ছে। একপ্রকার জুলুমবাজি করা হচ্ছে। যদিও এব্যাপারে এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলব। অন্যদিকে বিডিও অঙ্কুর মিত্র বলেন, কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু বলা ঠিক হবে না। পঞ্চায়েতকে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট হাতে পেয়ে মন্তব্য করব।