• পড়ুয়াদের মোবাইল ছাড়িয়ে বইমুখী করতে গল্পের বইও সার্বিক মূল্যায়নে
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামের অন্যতম নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রানী বিনোদমঞ্জুরী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়। এটি আরবিএম স্কুল নামেই বেশি পরিচিত। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের স্থানীয় গ্রন্থাগারের সদস্য করা হচ্ছে। সেখানে নিজেদের পছন্দমতো গল্পের বই খুঁজে নিচ্ছে পড়ুয়ারা। সার্বিক মূল্যায়নে নৃত্যগীত, ছবি আঁকা, হাতের কাজের মতো সৃজনশীল কাজের পাশাপাশি পড়ুয়ারা গল্পের বই পড়ছে কিনা-তা দেখা হবে।

    ডিজিটাল যুগে ছেলেমেয়েদের মোবাইলের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। ছোট ছেলেমেয়েরা বাংলা সাহিত্যের বিপুল ভাণ্ডার থেকে অপরিচিত থেকে যাচ্ছে। সেজন্য পড়ুয়াদের মধ্যে গল্পের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রন্থাগারে ভর্তি হওয়া বা গল্পের বই পড়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। পরীক্ষামূলকভাবে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। শহরের আলাপনী মহকুমা গ্রন্থাগারে সন্তানদের ভর্তি করাচ্ছেন। স্কুলের পাশাপাশি লাইব্রেরির সামনেও অভিভাবকদের ভিড় জমছে। খুদে পড়ুয়ারা পাঠাগারে নিজেদের পছন্দের বই খুঁজে নিচ্ছে। পড়ুয়ারা বইমুখী হওয়ায় উচ্ছ্বসিত গ্রন্থাগার বিভাগের আধিকারিকরাও। দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, কিছুদিনের মধ্যে জেলার বিভিন্ন গ্রন্থাগারে ওয়াইফাই পরিষেবা চালু করা হবে। পাঠকরা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবেন।

    আরবিএম স্কুলের শিক্ষিকা শ্বেতা হালদার বলেন, পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই পড়লে মনের বিকাশ হয়। গল্পের বই পড়ার অভ্যাস পরবর্তীতে জটিল কোনও বিষয়ে অধ্যয়ন ও বোঝার শক্তি বাড়িয়ে দেয়। সেজন্য ছোটবেলা থেকেই সেই অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। পরীক্ষামূলকভাবে স্কুলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের গল্পের বই পড়ায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তারা গল্পের বই পড়ছে কিনা-সেটা সার্বিক মূল্যায়নের সময় দেখা হবে।

    স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পুষ্পলতা বাড়ুই মুখোপাধ্যায় বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির যুগে পঠনপাঠনের ধরন বদলে যাচ্ছে। আমরা পড়ুয়াদের সার্বিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য রাখি। শিক্ষিকাদের পাঠদানের ক্ষেত্রে নতুন নতুন পদক্ষেপ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের গল্প পাঠে আগ্রহী করে তোলার বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। তবে অভিভাবকরা উৎসাহের সঙ্গে এই উদ্যোগ গ্ৰহণ করেছেন। আলাপনী মহকুমা গ্ৰন্থাগারের গ্ৰন্থাগারিক অদিতি শীট মণ্ডল বলেন, লাইব্রেরিতে স্কুলপড়ুয়াদের আনাগোনা বাড়ছে। পড়ুয়ারা সুকুমার রায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, দক্ষিণারঞ্জন মিত্র, লীলা মজুমদারের বই খুঁজছে। অভিভাবকরা ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে গ্ৰন্থাগারে ভিড় জমাচ্ছেন। এটা আমাদের কাছে আনন্দের বিষয়।
  • Link to this news (বর্তমান)