• পুরুলিয়া শহরে ভোটার তালিকায় একাধিক অসঙ্গতি, চাপানউতোর
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: কোথাও একই ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় দু’ জায়গায় রয়েছে। কোথাও জীবিত ব্যক্তির নাম মৃত বলে বাদ পড়েছে ভোটার তালিকায়। কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে, নাম কিংবা স্বামীর নামের জায়গায় শুধুমাত্র কিছু চিহ্ন রয়েছে। দলীয় নির্দেশে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে এমনই ঘটনা জানতে পেরেছে পুরুলিয়া শহর তৃণমূল নেতৃত্ব। এনিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। 

    পুরুলিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রদীপ ডাগা বলেন, দলনেত্রী মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা পুরুলিয়া শহরজুড়ে স্ক্রুটিনি শুরু করেছি। শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এই কাজ শুরু করতে গিয়ে ভোটার তালিকায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। যেমন ২২০ নম্বর বুথের বাসিন্দা সুধাংশুশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ভোটার তালিকায় ৪৫২ এবং ৪৫৩ নম্বর সিরিয়ালে দু’জন রয়েছেন। এপিক নম্বর আলাদা। ২২১ নম্বর বুথের বাসিন্দা রিচা দাস। তাঁর নামও ভিন্ন এপিকে ভোটার তালিকায় দু’বার রয়েছে। তবে, একটিতে বাড়ির নম্বর নেই, অন্যটিতে আছে। ২২১ নম্বর বুথের বাসিন্দা অর্চিতা মণ্ডলের নামও ভোটার তালিকায় দু’ বার আছে। পিতার নামের এক জায়গায় লেখা রয়েছে, অচিন্ত্য ক্রু মণ্ডল, অন্যটিতে অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল। তৃণমূলের অভিযোগ, এরকম উদাহরণ ভূরি ভূরি আছে ভোটার তালিকায়। 

    দীর্ঘ বছর আগে মৃত ব্যক্তির ভোটার তালিকায় নাম যেমন আছে, তেমনই জীবিত ব্যক্তির নাম নাম ভোটার তালিকা থেকে মুছে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা নিমাইচন্দ্র মণ্ডল। ভোটার লিস্টে তাঁর নামের উপর ‘ডিলিটেড’ স্ট্যাম্প মারা। তৃণমূল নেতৃত্বই তাঁকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেন। এরপর তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘুরে নতুন ভোটার কার্ড পেয়েছেন। কিন্তু পুরাতন নামের জায়গা সংশোধন না করেই নতুন এপিক নম্বর দিয়ে ভোটার কার্ড ইস্যু হয়েছে তাঁর নামে। আবার, দীর্ঘ বছর আগে মৃত্যু হয়েছে, এমন ব্যক্তির নাম এখনও রয়েছে ভোটার তালিকায়। ভোটার তালিকায় এরকম নানা অসঙ্গতির জন্য কমিশনের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছে তৃণমূল। তাদের দাবি, কমিশনের উদাসীনতার কারণেই ভোটার তালিকা এতো ত্রুটিপূর্ণ। প্রশাসনের কাছে এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। পাল্টা বিজেপির দাবি, প্রতি বছর এই ধরনের ভোটারদের নাম কাটার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে তালিকা জমা দেওয়া হলেও কোনও কাজ হয় না। আসলে কমিশনের হয়ে কাজ করে তো স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরাই। তারা ভোট চুরি করতে এভাবেই তৃণমূলকে পরোক্ষে মদত করছে। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি গৌতম রায় বলেন, এই কারণেই তো বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-এর প্রয়োজন। যদিও পাল্টা শহর সভাপতি বলেন, এসআইআর–এর নামে যদি প্রকৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত হয়, তাহলে কিন্তু প্রতিবাদের ঝড় উঠবে।  
  • Link to this news (বর্তমান)