পাড়ায় সমাধানে বরাদ্দ অর্থ নিয়ে অনিয়ম নয়, পূর্ব বর্ধমানে গঠিত বিশেষ হল টিম
বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: প্রতিটি পাড়ার ছোট ছোট সমস্যাগুলিরও সমাধান করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারজন্য বুথ পিছু ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই টাকা যাতে ভালোভাবে খরচ হয়, তা দেখার জন্য বিশেষ কমিটি করা হয়েছে। কোথাও অনিয়ম হলেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই প্রকল্পের প্রতিটি টাকার হিসেব রাখতে হবে। কোনও প্রভাবশালী বা মাতব্বর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। অভিযোগ পাওয়া গেলেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা ক্যাম্পগুলি পরিদর্শন করছেন। জেলাশাসক আয়েশা রানি এ নিজে একাধিক ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার কথা জানতে চেয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, বরাদ্দ হওয়া টাকা এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করা হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার বাসিন্দা বেহাল রাস্তা, নিকাশি, জলাশয় সংস্কার, পথবাতি বসানো সহ বিভিন্ন বিষয়ে আবেদন জানাতে পারবেন। জেলার ক্যাম্পগুলিতে প্রতিদিনই স্থানীয়দের ভিড় উপচে পড়েছে। কাজ দেখার জন্য প্রতিটি ব্লকে আলাদা টিম তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা একাধিকবার কাজ পরিদর্শন করবেন। কাজের মান খারাপ হলে রিপোর্টিং করবে।
গুসকরার বাসিন্দা অমর চট্টোপাধ্যায় বলেন, পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানানোর এমন প্ল্যাটফর্ম আগে পাওয়া যায়নি। প্রতিটি পাড়ায় কিছু না কিছু সমস্যা রয়েছে। কবে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি অর্থ বরাদ্দ করবে সেদিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। এখন টাকা পাওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, এবছর অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তা বেহাল হয়ে গিয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা খানাখান্দে ভরে গিয়েছে। গ্রামের রাস্তাগুলিরও একই অবস্থা হয়েছে। পথশ্রী প্রকল্পে এর আগে প্রত্যন্ত এলাকার রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। সেই রাস্তাগুলি আবার সংস্কার করা হবে।
রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের দাবি ক্যাম্পে গিয়ে জানাতে পারছেন। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও বিভিন্ন সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এটা অভিনব উদ্যোগ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বরাদ্দ হওয়ার টাকার খুঁটিনাটি সম্পর্কে খবর রাখতে বলা হয়েছে। কোথায় কত টাকা খরচ হচ্ছে, সেসব হিসেব রাখতে হবে। ঠিকাদাররা ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কাজের মান খারাপ হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ওই ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে। কাজে কোনও অনিয়ম করা যাবে না।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রতিটি ক্যাম্পেই এলাকার বাসিন্দাদের বহু অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।