• কোনও খোঁজই নেয়নি বিহার সরকার, বর্ধমানে বাস দুর্ঘটনায় ১১ মৃতের পরিবার ও জখমদের পাশে মমতা
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় বিহারের ১১জন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩৭জন জখম হয়েছেন। তা নিয়ে বিহার রাজ্য সরকারের কোনও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তাঁদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু আর্থিক ক্ষতিপূরণ নয়, জখমদের চিকিৎসার তদারকি করছেন মন্ত্রী এবং জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। এতে খুশি জখম ও মৃতদের পরিজনরা। তাঁরা বলছেন, এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটল। বিহার থেকে কোনও জনপ্রতিনিধি বা আধিকারিক এসে খোঁজ নিতে পারতেন। কিন্তু কেউ একবারের জন্য যোগাযোগ করেননি। আর্থিক সহযোগিতা করা তো দূরের কথা। 

    উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে বর্ধমানের ফাগুপুরের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লরির পিছনে বাস ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই ১০জন মারা যান। অন্য আরেকজন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর আর্ট অ্যাটাকে মারা যান। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেয়। তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। মৃতদেহ বিহারে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়।

    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মীনা নামে এক পুণ্যার্থী। তিনি বলেন, চিকিৎসা পেতে সমস্যা হচ্ছে না। বাংলার দিদি যা করেছেন তাতে আমরা খুশি। এতটা সহযোগিতা পাব বলে আশা করিনি। কিন্তু আমাদের রাজ্যের সরকারের সেই সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তাদের উচিত ছিল জখম এবং মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। কারও কিছু সমস্যা রয়েছে কি না, তা খোঁজ নেওয়া। আর এক পুণ্যার্থী পুলিন সাহানি বলেন, এখানে ভালোই পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। আধিকারিকরা এসে বারবার খোঁজ নিচ্ছেন। এটা বড় পাওনা।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জখমদের মধ্যে চার-পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের মধ্যে বাসের চালক রয়েছেন। তাঁর আঘাত সবচেয়ে বেশি। তিনি ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণেই দুর্ঘটনা হতে পারে। এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তারজন্য পুলিস মাঝ রাস্তায় বাস বা অন্য যানবাহন দাঁড় করিয়ে চা খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার রাত থেকেই কয়েকটি জায়গায় চা খাওয়ানো হয়। এছাড়া জাতীয় সড়কের পাশে ট্রাক বা লরি যাতে না দাঁড়াতে পারে তারজন্য পুলিস অভিযান শুরু করেছে। প্রথমে চালকদের সতর্ক করা হচ্ছে। পরে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিস সুপার সায়ক দাস বলেন, কেউ নিজের ইচ্ছেমতো জায়গায় ট্রাক বা অন্য গাড়ি দাঁড় করাতে পারবে না। যারা আইন ভাঙবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মানবিক। তিনি সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়ান। মৃত বা জখমরা কেউই এরাজ্যের বাসিন্দা নন। তারপরও তিনি সবরকমভাবে তাঁদের পরিবারের লোকজনদের সহযোগিতা করছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)