• আজ বিক্ষোভে হিংসার ছক এসএসসি অধিকার মঞ্চের! পুলিসের হাতে কল রেকর্ডিং, চিহ্নিত দুই সন্দেহভাজন
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: এসএসসির যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চের বিক্ষোভ-অভিযানে পুলিসকে বোমা মারার ছক? এমনকী, এসএসসির পরীক্ষার সময় প্রতিটি সেন্টারে আগুন দেওয়ার মাস্টার প্ল্যানও? পরীক্ষা কেন্দ্র তথা স্কুলের ভিতর সকেট বোমা মারার প্রস্তুতি? এসএসসির অধিকার মঞ্চের দুই সদস্যের কথোপকথনের এমনই কল রেকর্ডিং হাতে এসেছে পুলিসের। রবিবার পুলিসের পক্ষ থেকে তা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, আজ সোমবার অধিকার মঞ্চের পক্ষ থেকে যে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তাতেই হিংসাত্মক হামলার ছক করা হয়েছে। আর যারা ওই হামলার পরিকল্পনা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্থানে বিক্ষোভ না হওয়ায় ওই আন্দোলনের অনুমতিও দেয়নি বিধাননগর কমিশনারেট। 

    রবিবার সল্টলেকে পুলিস কমিশনারের অফিসে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিধাননগরের ডেপুটি পুলিস কমিশনার অনীশ সরকার। তিনি বলেন, ‘এসএসসি সংক্রান্ত যে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ রয়েছে, সেই মঞ্চের সদস্য সুমন বিশ্বাসের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখেছি এবং তিনি আমাদের একটি ই-মেলও করেছেন। তাতে ১৮ আগস্ট তাঁরা একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছেন। কিন্তু হাইকোর্ট তাঁদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জন্য একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল। সেই মর্মে অর্ডারও আছে। কিন্তু তাঁরা ওই জায়গার বাইরে বিক্ষোভ করতে চাইছেন। মহামান্য আদালতের নির্দেশ আমান্য‌ করায় আমরা অনুমতি দিইনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসএসসির অধিকার মঞ্চের দু‌ই সদস্যের কথোপকথনের কল রেকর্ডিং পেয়েছি। যেখানে হিংসা ছড়ানোর ছক কষা হয়েছে। পুলিসের উপর পেট্রল বোমা মারার কথা বলা হয়েছে। পরীক্ষার সেন্টারেও সকেট বোমা মারার কথা বলা হয়েছে। আমরা দু’জনকে চিহ্নিত করেছি। অধিকার মঞ্চকে অনুরোধ করছি, কিছু লোক এই গণ্ডগোল করতে চাইছে। বাকিরা সতর্ক থাকুন। ওদের ফাঁদে পা দেবেন না। আইন অমান্য হলে আমরা আইন রক্ষার সবরকম ব্যবস্থা নেব।’

    সাংবাদিক সম্মেলনে ৬ মিনিটের ওই কল রেকর্ডিং প্রকাশ করা হয়। তাতে শোনা গিয়েছে, ‘কঠিন মার দেব। কঠিন হারে মারপিট লাগবে কলকাতায়। যতই পুলিস প্রোটেকশন থাকুক। যে কাছে আসবে, পেট্রল বোতল ছুড়তে হবে। আর দেশলাই কাঠি, লাইটার ছুড়ে আগুন লাগাতে হবে। তাহলে ভয় পেয়ে যাবে। একটা অ্যাকশন হলেই সরকার গুঁড়িয়ে যাবে।’... ‘জামা-কাপড় নয়, ব্যাগে বড় বড় পাথর নিয়ে যাব। মারতে এলেই মাথায় গ্যাঁক করে দেব। একটাকে মেরেই দেব। গোটা কলকাতা জ্বলবে।’ আরও শোনা গিয়েছে, ‘যে যে সেন্টারে পরীক্ষা হবে, সেখানে আগুন লাগিয়ে দেব। কোনও সেন্টারে পরীক্ষা নিতে দেব না। সকেট বোমা টোমাও নিতে হবে। দু’-একটা সকেট বোমা স্কুলের মধ্যে মারব দুমদাম করে।’ যদিও মঞ্চের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ সাফ অস্বীকার করা হয়েছে। সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘কোনও প্ররোচনায়, পুলিসকে গালিগালাজ বা মারধরে আমি যুক্ত থাকি না। কে পেট্রল বোমা বাঁধবে, সেটা খুঁজে পুলিস ব্যবস্থা নিক। করুণাময়ী মোড়ে জমায়েত করে এসএসসি দপ্তর পর্যন্ত অভিযান হবে। পুলিসের সঙ্গে সংঘাত নেই। পুলিস-প্রশাসন আমাদের বন্ধু। যারা এইসব বলেছে... শিক্ষক হয়ে এইসব কথা না বলাই ভালো।’
  • Link to this news (বর্তমান)