• ৩২ বছরের সংসার, পুত্র ‘দিতে না পারায়’ স্ত্রীকে ঘরছাড়া করেছেন স্বামী! প্রতিবাদে ৩ কন্যাকে নিয়ে ধর্নায় প্রৌঢ়া
    আনন্দবাজার | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • ৩২ বছরের সংসার। পরিবারে স্ত্রী এবং তিন সাবালক কন্যা। কিন্তু পুত্রসন্তান না-থাকায় আক্ষেপের অন্ত নেই প্রৌঢ়ের। এ নিয়ে দৈনন্দিন ঝগড়া বাড়িতে। শেষে স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে তিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধর্নায় বসলেন প্রৌঢ়া। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ঘটনা।

    হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আলিপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহাতুল হকের সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা সাহিদা বেগমের বিয়ে হয়েছে তিন দশক আগে। কয়েক বছর সংসার করার পর প্রথম সন্তানের জন্ম দেন সাহিদা। প্রৌঢ়ার দাবি, কন্যাসন্তান জন্মানোয় খুশি ছিলেন না স্বামী। তার পর আরও দুটো ছেলে হয় তাঁদের। তবে দু’জনেই মারা যায়। পুত্রলাভের আশা ছাড়েননি রাহাতুল।

    কিন্তু তার পর স্ত্রী আরও দুই কন্যার জন্ম দেওয়ায় সংসারে শুরু হয় অশান্তি। অভিযোগ, ‘ছেলে দিতে পারেননি’ বলে স্ত্রীকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন‌ করেছেন স্বামী। ক্রমশ অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছিল। একটা সময় স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বার করে দেন তিনি।

    তিন কন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন প্রৌঢ়া। তিনি বলেন, ‘‘নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। এর‌ মধ্যে স্বামী আরও দুটো বিয়ে করে নিয়েছে। ওর তৃতীয় স্ত্রী মারা গিয়েছে। তার পর জেনেছি, দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করছে।’’ তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার স্বামীর বাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

    রবিবার সকাল থেকে বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন প্রৌঢ়া। তিন মেয়ে মায়ের সঙ্গে ঠায় বসে। প্রৌঢ়া হাতে পোস্টার নিয়ে বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতাম। কোনও খরচ দিত না বর। অনেক বার বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এলেই তাড়িয়ে দেওয়া হত। এখন বাড়িতে ঢুকতে গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ে অন্যের বাড়িতেও আশ্রয় নিয়েছি।’’

    অন্য দিকে, অভিযুক্তের পরিবারের দাবি, প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে অনেক আগে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে রাহাতুলের। রাহাতুল নিজে অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন। প্রৌঢ়া হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বলে খবর। এই গোটা ঘটনায় গ্রামে দিনভর শোরগোল চলে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)