খনিশহর রানিগঞ্জের প্রধান ও সংযোগকারী বিভিন্ন রাস্তা বেহাল। ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। যানবাহনের ক্ষতি হচ্ছে বলেও দাবি পরিবহণ মালিক সংগঠন এবং কর্মীদের।
শহরের লাইফ লাইন বলে পরিচিত নেতাজি সুভাষ বসু রোড। দু’দশক আগে যেটি ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের অন্তর্ভুক্ত হয়। শহরের ভিতরে সাহেবগঞ্জ রেল ক্রসিং থেকে পঞ্জাবি মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে চার কিলোমিটার অংশ ভেঙেচুরে একাকার। রেল ক্রসিং, শিশুবাগান, রাজবাড়ি মোড়, পঞ্জাবি মোড় এলাকায় খানাখন্দ বেশি।
আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, প্রতিদিন দু’শোর বেশি বড় বাস, মিনিবাস শহরে যাতায়াত করে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। সড়ক কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে পাথরের গুঁড়ো ফেলেন। কিন্তু বর্ষায় সব ধুয়ে যাচ্ছে। ডক্টর্স কলোনির বাসিন্দা, চিকিৎসক সমরেন্দ্রকুমার বসুর দাবি, রাজবাড়ি মাঠের সামনে থেকে বাঁশড়া মোড় পর্যন্ত সংযোগকারী রাস্তাটি সংস্কার চার মাস আগে হলেও এখন ভেঙেচুরে গিয়েছে। রানিগঞ্জ সিটিজেন্স ফোরামের কার্যকরী সভাপতি গৌতম ঘটকের দাবি, নেতাজি সুভাষ বসু রোডের প্রধান বিকল্প পিএন মালেয়া রোডের অবস্থাও বিপজ্জনক। এর পাশে রয়েছে নজরুল স্মৃতি বিজড়িত সিহারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, পড়ুয়ারা সাইকেলে আসতে পারছে না। বৃষ্টি হলে রাস্তার গর্ত জলে ভরে যায়। সাইকেল থেকে পড়ে দু’জন ছাত্রের হাত, পা ভেঙেছে।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি নারায়ণ বাউরির অভিযোগ, সিহারসোল রাজবাড়ি মোড় থেকে রানিসায়র মোড় পর্যন্ত দু’কিলোমিটার অংশের মধ্যে দেড় কিলোমিটার খানাখন্দে ভরা। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে জিরাডাঙা পর্যন্ত রাস্তারও একই অবস্থা। এই দু’টি রাস্তা জাতীয় সড়ক এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন এলাকাবাসী। যক্ষ্মা হাসপাতাল থেকে শীতল দাস যাওয়ার রাস্তাও গর্তে ভরে গিয়েছে। সিপিএমের রানিগঞ্জ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুপ্রিয় রায়ের দাবি, “কুমার বাজার, অশোকপল্লি, আরএনএন লেন, ভগতপাড়া থেকে বড়দহি, রাজারবাধ মোড়ে রাস্তা কার্যত মরণফাঁদ। বিভিন্ন সংগঠন রাস্তা সংস্কারের আবেদন করলেও লাভ হয়নি।”
রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রোহিত খেতান জানান, একটি বাইপাস আছে। বাইপাসের অবস্থাও খুবই খারাপ। রাস্তাগুলি পুরনো প্রযুক্তিতে তৈরি। সর্বাধিক ১০ টন পণ্যবাহী গাড়ি যেতে পারে। সমস্ত রাস্তা আধুনিক প্রযুক্তি মেনে করা প্রয়োজন, যাতে ৬০ টন পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে পার। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, পুরসভা, এডিডিএ-র কাছে সংস্কারের আবেদন জানানো হয়েছে।
২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহাজাদার দাবি, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে প্রধান রাস্তাটি সংস্কারের আবেদন করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ আপাতত পাথরের গুঁড়ো ফেলে ভরাট করে দেবে। সংস্কারের কাজ বর্ষার পরে শুরু করবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। পিএন মালেয়া রোড সংস্কারের জন্য ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। রাজবাড়ি মোড় থেকে রানিসায়র মোড়, জিরাডাঙার রাস্তাও সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। অন্য রাস্তাগুলির সংস্কারও হবে।