• নেশামুক্তি কেন্দ্রে ফের মৃত্যু, প্রশ্নে নজরদারি
    আনন্দবাজার | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • ফের নেশামুক্তি কেন্দ্রে রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটল বীরভূমে। রবিবার বিকেলে শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত বল্লভপুর এলাকার একটি নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে উদ্ধার হয় মনু হাজরার (২৫) ঝুলন্ত দেহ। রাতে মৃতের পরিবারের তরফে শান্তিনিকেতন থানায় ওই কেন্দ্রের মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আগেও বোলপুরে একাধিক বার নেশামুক্তি কেন্দ্রে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ফের এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মনুর বাড়ি বোলপুরের জামবুনি এলাকায়। পেশায় রংমিস্ত্রির কাজ করতেন ওই যুবক। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন মনু। পরিবারের লোকজন মাস চারেক আগে বল্লভপুর এলাকার ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে তাঁকে ভর্তি করেন। রবিবার বিকেলে মনুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মী। তারপরই পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়।

    পরিবারের অভিযোগ, মনুর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের কারণেই এই মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ আসার আগে ঝুলন্ত দেহ কেন্দ্রের কর্মীরাই নামিয়ে নিজেরাই ময়না তদন্তের বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল নিয়ে যান বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের। মৃতের দাদা হারাধন হাজরা বলেন, ‘‘তিন দিন আগে মা ভাইকে দেখে এসেছিল। ভাই ঠিকই ছিল। আমার সাথেও কথা হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়িও ফিরিয়ে নিয়ে আসতাম। কিন্তু তার আগেই এমন ঘটনা।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাদের ধারণা তাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার করার জন্য তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি হোক।’’

    এর আগেও বোলপুর শহরের একাধিক নেশা মুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ডিসেম্বরেই বোলপুর বাইপাসে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে এক যুবকের মৃত্যুর পরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল। তার আগে বোলপুরের মকরমপুর এলাকার একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে দুই রোগীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। গত বছর পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার ভেদিয়া এলাকার একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে বোলপুরের এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। প্রশাসন ও পুলিশের তরফে নেশামুক্তি কেন্দ্রে নজরদারির আশ্বাসও দেওয়া হয়। তবে পরিস্থিতির যে বদল হয়নি, রবিবারের ঘটনাই তার প্রমাণ বলে ক্ষোভ মৃতের পরিবারের।

    মৃতের পরিবারের তরফে এ দিন রাতেই শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের জন্য জড়ো হন মৃতের পরিবারের লোকজন। নেশামুক্তি কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেন্দ্রের তরফে কাউকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)