জেলা নেতাদের সঙ্গে ফের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, নজর তমলুক সংগঠনে
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৮ আগস্ট ২০২৫
রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলায় সাংগঠনিক ঘাটতি মেটাতে ফের সক্রিয় হচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকে অভিষেকের জেলাওয়ারি বৈঠক ফের শুরু হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে ডাকা হয়েছে কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে। দলীয় সূত্রে খবর, এই বৈঠকে জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বিধায়ক, জেলা সভাপতি এবং বিভিন্ন শাখা সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একাধিক জেলায় সাংগঠনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন অভিষেক। অগস্টের শুরুতে তিনি প্রথমে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরবর্তীতে মালদা, জলপাইগুড়ি, বহরমপুর ও উত্তর দিনাজপুর সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গেও দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। প্রতিটি বৈঠকেই ২-৩ ঘণ্টা সময় দিয়ে জেলাস্তরের সমস্যা ও সমন্বয়ের বিষয়ে সরাসরি বার্তা দিয়েছেন তিনি।
তবে এর মাঝেই দিল্লিতে ব্যস্ত রাজনৈতিক সূচি থাকার কারণে দক্ষিণ দিনাজপুর ও জঙ্গিপুরের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত রাখতে হয়েছিল। এখন সেই ধারা ফের শুরু হচ্ছে তমলুক জেলা দিয়ে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীকালকের বৈঠকে থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলা সভাপতি সুজিত রায়, প্রবীণ নেতা বিপ্লব রায়চৌধুরী, নবনিযুক্ত চেয়ারপার্সন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক বিধায়ক ও সংগঠনের নেতা। এমনকি পাঁশকুড়ার বিতর্কিত নেতা আনিসুর রহমানকেও বৈঠকে ডাকা হয়েছে। আনিসুরের নাম পূর্ব মেদিনীপুরে এক খুনের ঘটনায় জড়িয়েছিল। তিনি কিছুদিন আগে জামিনে মুক্তি পান। ফলে তাঁর উপস্থিতি ঘিরে দলের মধ্যেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল রাজ্যে ব্যাপক সাফল্য পেলেও পূর্ব মেদিনীপুরে ফলাফল হতাশাজনক ছিল। তমলুক আসনে বিজেপি জিতেছে অল্প ব্যবধানে, তমলুকের অন্তর্গত একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে গেরুয়া শিবির লিড নিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে যেখানে তৃণমূল ও বিজেপি প্রায় সমানে সমান লড়াই করেছিল, সেখানে এবারের লোকসভা ফল দলের ভেতরে অস্বস্তি তৈরি করেছে। জেলা নেতৃত্বের সমন্বয়ের অভাব এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলকেই দায়ী করা হচ্ছে খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য।
অভিষেকের এই বৈঠকে তাই বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রণনীতি ও সংগঠন পুনর্গঠনের বিষয়টি। দলের এক নেতার কথায়, এই বৈঠক মূলত তমলুক সাংগঠনিক জেলা নিয়েই। কাঁথি জেলা নেতৃত্বকে ডাকা হয়নি। অভিষেক এখানে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। কারণ পূর্ব মেদিনীপুরের খারাপ ফলাফল নিয়ে নেতৃত্বের চিন্তা যথেষ্ট।