• 'স্যার, আমরা খুন করেছি, অস্ত্র বাড়িতেই রাখা আছে', থানায় এসে পুলিশকে জানাল মা ও ছেলে...
    আজকাল | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাত ও মুখ বেঁধে নৃশংসভাবে নিজের স্বামীকে খুন করে ইংরেজবাজার থানায় আত্মসমর্পণ করল স্ত্রী এবং সৎ ছেলে। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য মালদার ইংরেজবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের নরসিংহ কুপ্পা এলাকায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।  

    জানা গিয়েছে, মৃতের নাম যদুভূষন দাস। পুলিশ এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী দয়া দাস এবং তার সৎ ছেলে বিক্রমকে গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার রাতে সৎ ছেলে এবং মা মিলে বাবাকে নৃশংস ভাবে খুন করে বলে অভিযোগ। প্রথমে হাত-পা বেঁধে ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর ধারালো কোদাল এবং হাঁসুয়া দিয়ে একাধিকবার কোপানো হয়। এরপর রক্তাক্ত দেহ টেনে হিঁচড়ে ঘরের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সকালে এরপর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে মা ও ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।  

    স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম রাজপুত জানান, 'সকালে গিয়ে দেখলাম যদুভূষন দাসের স্ত্রী ও ছেলে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে ওকে মেরেছে। এদের মধ্যে কিন্তু পারিবারিক কোনও ঝামেলা দেখতাম না। যদুভূষনের স্ত্রী নিজে সকালে থানায় গিয়ে পুলিশ ডেকে এনেছে। আমরা চাইছি তার যেন কঠোর শাস্তি হয়।' এলাকার অপর এক বাসিন্দা প্রতিমা মণ্ডল জানান, 'এই বাড়িতে ছেলে বিক্রম, দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী দয়া দাস ও তার বাবা যদুভূষণ দাস বাড়িতে থাকতেন। পুলিশ এসে তাঁর ঘর থেকে একটি কোদাল ও একটি হাঁসুয়া নিয়ে যায়। আমরা চাই তার যেন কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি হয়।' 

    ইংরেজবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজিত সাহা জানান, 'আমি সকাল বেলা সংবাদমাধ্যমের কাছে জানতে পারলাম আমার ওয়ার্ডের মধ্যে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখলাম ঘটনা সত্য। রবিবার গভীর রাতে এই খুনের ঘটনাটি ঘটে। যদুভূষণ খুন হয়েছেন। তাঁর বউ এবং তাঁর সৎ ছেলে মিলে খুন করেছে এবং তারা নিজেরাই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আমি এলাকার বাসিন্দার কাছে শুনতে পেলাম পুলিশ বাড়িতে গিয়ে মৃতদেহ নিয়ে গিয়েছে। গোটা বিষয়টি পুলিশ দেখছে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।' যদিও স্থানীয়রা মৃতের প্রশংসা করলেও পাল্টা কাউন্সিলরের অভিযোগ, প্রতিদিন মদ খেয়ে বাড়িতে এসে  ওই ব্যক্তি অশান্তি করত বলে জানতে পেরেছি। সেখান থেকে হয়ত নৃশংস খুনের ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। বাকিটা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

    থানার এক পুলিশকর্মী জানান, 'যেভাবে তারা এসে খুনের কথা স্বীকার করল সেটা খুবই কম দেখা যায়। কারণ, সাধারণত অপরাধী সবসময় চেষ্টা করে নিজেকে আড়ালে রাখার। কিন্তু এদের এই স্বীকারোক্তি শুনে প্রথমে সবাই কিছুক্ষণের জন্য হকচকিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর তাদেরকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেহ এবং খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। হতে পারে অভিযুক্তদের কোনও তীব্র ঘৃণা হয়তো নিহতের প্রতি ছিল। যার জেরে এরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ। এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।'
  • Link to this news (আজকাল)