বাংলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তথ্যকেন্দ্রের বিপ্লব, কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলছে নিউটাউনে
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
ডিজিটাল যুগে ডেটা এখন এক নতুন সম্পদ। সেই সম্পদের ভাণ্ডার গড়ে তুলতেই বাংলায় শুরু হচ্ছে এক বিপ্লব। সেই লক্ষ্যে কলকাতার নিউটাউনের সিলিকন ভ্যালিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল সিটিআরএলএস-এর প্রথম ডেটা সেন্টার। এই ডেটা সেন্টারকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানের বাংলায় বাড়তে চলেছে কাজের সুযোগ।
জানা গিয়েছে, পাঁচ দশমিক ছয় একর জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা এই আধুনিক স্থাপনার প্রথম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ষোলো মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই কেন্দ্রকে ২০৩০ সালের মধ্যে ষাট মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রায় দুই হাজার দুই শত কোটি টাকার বিশাল বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পে চার শতাধিক কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে।
সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে তাদের প্রতিটি তথ্যকেন্দ্রে পরিবেশবান্ধব শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। ভারতে তথ্যের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। বিনোদনের মাধ্যমে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, অর্থ লেনদেনে ইউনিফায়েড পেমেন্ট ব্যবস্থা, অনলাইন বাজারের প্রসার এবং সামাজিক মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের বিপুল ব্যবহার—সব মিলিয়েই তথ্যকেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা প্রতিদিন বাড়ছে।
এই তথ্যকেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হবে দুই হাজার ছাব্বিশ সালের শেষ ভাগে অথবা দুই হাজার সাতাশ সালের শুরুতে—এমনটাই আশা করছে সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্যকেন্দ্র বান্ধবনীতি যে এক বড় ভূমিকা পালন করছে, সেটাও স্বীকার করেছে তারা। জমির দলিল শুল্কে সম্পূর্ণ ছাড়, প্রথম পাঁচ বছরের জন্য বিদ্যুৎ বিলের বিশেষ সুবিধা, ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে এক জানালা নীতি—এসবই বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলির কাছে পশ্চিমবঙ্গকে আকর্ষণীয় করে তুলছে।
তথ্যের চাহিদা যেমন বেড়ে চলেছে, তেমনই খুলে যাচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের রাস্তা। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, নিউটাউনের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর তথ্যকেন্দ্র কেবল প্রযুক্তির নতুন ভরকেন্দ্রই নয়, বাংলার ভবিষ্যৎ অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি হয়ে উঠতে চলেছে।