দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান নিয়ে নতুন মামলা দায়ের হাইকোর্টে
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৮ আগস্ট ২০২৫
দুর্গাপুজোর অনুদান ইস্যুতে ফের সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত দুর্গাপুজোর অনুদানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ফের মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়ে বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী শামিম আহমেদ। চলতি সপ্তাহেই মামলাটির শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই একই বিষয়ে এর আগেও মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিলেও, মূল মামলা এখনও জারি রয়েছে। ফলে নতুন মামলার সঙ্গে পূর্ববর্তী মামলারও শুনানি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই বছরের দুর্গাপুজোর জন্য রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে অনুদানের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে প্রতি কমিটিকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তা, কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘোষণা করেন। শুধু অনুদান নয়, পুজো কমিটিগুলির জন্য বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ ছাড়, ফায়ার লাইসেন্স ও অন্যান্য সরকারি ফি-তেও ছাড় দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আগামী ৫ অক্টোবর হবে দুর্গাপুজো কার্নিভাল।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যের পুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। প্রথম বছরে অনুদানের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার টাকা, যা ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজারে। পরবর্তী সময়ে এই অঙ্ক ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। গত বছর অনুদানের অঙ্ক ছিল ৮৫ হাজার টাকা। তখনই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পরের বছর থেকে এই অনুদান বেড়ে এক লক্ষ হবে। সেই ঘোষণা বাস্তবায়িত তো হয়েছেই, বরং তার থেকেও ১০ হাজার টাকা বেশি অর্থাৎ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অনুদানের কথা জানানো হয়েছে এ বছর।
দুর্গাপুজোয় রাজ্য সরকারের তরফে অনুদান দেওয়ার বিরোধিতা করে, প্রতি বছরেই আদালতে মামলা করা হয়। ২০২২ সালেও অনুদানের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই সময়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই অনুদান দেওয়া নিয়ে বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেয়। এর মধ্যে পুজো কমিটিগুলিকে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার নির্দেশও ছিল।
এবারও পুজোর অনুদান ঘিরেই প্রশ্ন তুলছেন একাংশ। তাঁদের মতে, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পরিকাঠামোর প্রয়োজনে যেখানে অধিকতর বরাদ্দ প্রয়োজন, সেখানে বিপুল সংখ্যক পুজো কমিটিকে কোটি কোটি টাকার অনুদান দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে মামলাকারীর তরফে। এখন দেখার, হাইকোর্ট এই বিষয়ে কী রায় দেয় এবং আদৌ এই অনুদানের উপর কোনও স্থগিতাদেশ জারি হয় কি না।