জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভালোবেসে সিফাত আলীকে বিয়ে করেন সৈয়দা ফাহমিদা তাহসিন (কেয়া)। প্রায় এক যুগের সংসারে চার সন্তানের জন্ম হয়। ১৩ আগস্ট মধ্যরাতে ফাহমিদার মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ফাহমিদাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন স্বামী সিফাত। পরে তিনি ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেন।
ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শেওড়াপাড়ার। ঘটনার পরদিন ফাহমিদার মা নাজমা বেগম মিরপুর মডেল থানায় সিফাতসহ ১০ জনকে আসামি করে খুনের মামলা করেন রুজু করেন।
Operation Sindoor killed atleat 150 Pak Army: পাকি
চুলায় ছিল রান্নার আয়োজন:
রাজধানীর ইস্কাটনের বাসিন্দা সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও নাজমা বেগমের দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছিলেন ফাহমিদা (২৬)। তিনি ভিকারুননিসা নূন স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। স্কুলে খেলাধুলাসহ সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পর তাঁর আর পড়াশোনা এগোয়নি।
ফাহমিদার পরিবার জানায়, ভিকারুননিসার স্বামী সিফাতরা দুই ভাই-বোন। সিফাতের আয়ের উৎস শেওড়াপাড়ায় থাকা তাঁর পৈতৃক সম্পদ।
ফাহমিদার পিসেমশাই মো. শামসুদ্দোহা খান প্রথম আলোকে বলেন, সিফাত প্রায়ই ফাহমিদাকে মারধর করতেন। চার সন্তানের কথা ভেবে ফাহমিদা সংসারে মানিয়ে চলছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে মেরে ফেলা হল।
ঘটনার সূত্রপাত:
সেদিন রাতে কী ঘটেছিল, তা পরিবারের সদস্যরা জেনেছেন ফাহমিদার বড় সন্তানের (১১) কাছ থেকে। রাত সাড়ে ১১টার সময় ফাহমিদা রান্না করছিলেন। সে সময় বাইরে থেকে আসেন সিফাত। দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। ফাহমিদাকে মারধর শুরু করেন সিফাত। ফাহমিদা বাঁচার চেষ্টা করেন। তখন তাঁকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন সিফাত। রাত প্রায় দু'টার সময় ফাহমিদার পরিবারকে ফোন করেন সিফাত। তিনি বলেন, 'কেয়া (ফাহমিদার ডাকনাম) খুবই অসুস্থ, আপনারা দ্রুত বাসায় আসেন।'
প্রথমে পরিবারের সদস্যদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে পান্থপথের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বলা হয়। হাসপাতালে গিয়ে মা-বাবা দেখেন, ফাহমিদা বেঁচে নেই। সিফাত দাবি করেন, ফাহমিদা আত্মহত্যা করেছেন। মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান সিফাত। সন্তানদের বোনের বাড়িতে রেখে নিজেদের বাড়ি তালা মেরে পালিয়ে যান তিনি।
ঘটনাস্থল:
শামসুদ্দোহা খান বলেন, পুলিস নিয়ে তালা ভেঙে তাঁরা শেওড়াপাড়ার বাড়িতে যান। ঢুকে দেখেন, রান্নাঘরে রান্নার আয়োজন রয়েছে। গ্যাসে হাঁড়ি বসানো। হাঁড়িতে মাংস-মসলাপাতি দেওয়া। রান্নার আয়োজন চলা অবস্থায় চার সন্তান রেখে ফাহমিদা আত্মহত্যা করেছেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। থানায় মামলা করতে বেগ পেতে হয়েছে। ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে তাঁরা সন্দিহান। তাঁদের মতে, এখন পর্যন্ত আসামিদের কেউ গ্রেফতার হননি।
মীরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি নিয়ে একাধিক দল কাজ করছে। তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। খুব শিগগির রহস্য উন্মোচন হবে। প্রধান আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।