ভোটের ১ বছর আগে BLA-দের তথ্য তলব কমিশনের, ‘এক্তিয়ার নেই’, হাই কোর্টে সওয়াল তৃণমূলের
প্রতিদিন | ১৮ আগস্ট ২০২৫
গোবিন্দ রায়: ভোটের ১ বছর আগে BLA-দের তথ্য তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। তার বিরোধিতায় এবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ কমিশন। দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়। যদিও সে আর্জি ফেরায় কলকাতা হাই কোর্ট। চলতি সপ্তাহে মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
বিহারের SIR নিয়ে জোর চাপানউতোর। রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর তরজা। এই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনের তরফে বাংলার সিইও-র কাছে একটি চিঠি আসে। ওই চিঠিতে বুথ লেভেল এজেন্ট বা BLA-দের তথ্য চাওয়া হয়। তা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানায় তৃণমূল। কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলা রুজু হয়। শাসক শিবিরের বক্তব্য, রাজ্যে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। এখনও প্রায় বছরখানেক বাকি। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী বিধি লাগু হয় না। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের অধীনে যায় না রাজ্য। তা সত্ত্বেও বছরখানেক আগেই বুথ লেভেল এজেন্টদের তথ্য চাওয়া আদৌ ‘এক্তিয়ারভুক্ত’?
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা সোমবার মামলাকারীদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, “শুধু কি আপনারাই প্রভাবিত হচ্ছেন? নাকি সমস্ত রাজনৈতিক দল?” পালটা তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, “অন্য দল হয়তো মেনে নিয়েছে। কিন্তু আমরা এই বিষয়টা চ্যালেঞ্জ করছি।” সওয়াল জবাবের পর এদিন দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে দেন বিচারপতি। চলতি সপ্তাহেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
বলে রাখা ভালো, নবান্ন বনাম কমিশন দ্বৈরথ সপ্তমে পৌঁছেছে। সম্প্রতি চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ চরমে পৌঁছয়। কমিশনের তরফে তাঁদের সাসপেন্ড এবং ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও রাজ্য শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেয় তাঁদের। নইলে ‘সুদক্ষ’, ‘কর্মঠ’ আধিকারিকদের মনোবল ভেঙে যাবে বলে যুক্তি দেয় রাজ্য। এরপর দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে। তলবে সাড়া দিয়ে কমিশনের দপ্তরে যান তিনি। সূত্রের খবর, সেখানে ‘এক্তিয়ার’ নিয়ে দু’পক্ষের কথাবার্তা হয়। কমিশন ‘এক্তিয়ার’ বহির্ভূত কোনও কাজ করছে না বলেই জানিয়ে দেয়। সূত্রের খবর, আধিকারিকদের সাসপেনশন সংক্রান্ত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন মুখ্যসচিব। তারই মাঝে BLA-দের তথ্য তলব ইস্যুতে সংঘাত যেন আরও প্রকট হয়েছে। নবান্নের দাবি, কমিশনের লাগাতার হস্তক্ষেপের ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাতে সমস্যা হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা, দু’পক্ষের সংঘাতে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে।