• তেল মালিশের অছিলায় খাস কলকাতায় পুত্রবধূকে ‘ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার শ্বশুর
    প্রতিদিন | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: মাত্র মাসতিনেক বিয়ে হয়েছে তরুণীর। আর এই তিন মাসের মধ্যেই একাধিকবার শ্বশুরবাড়িতেই ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ। ধর্ষণের অভিযুক্ত ওই তরুণী গৃহবধূরই শ্বশুর। তেল মালিশ করানোর নামে পুত্রবধূকে ঘরে ডেকে নিয়ে যায় শ্বশুর। ঘরের মধ্যেই চলে অকথ‌্য যৌন নির্যাতন। শেষ পর্যন্ত কোনওমতে বাড়ির ভিতর থেকে পালিয়ে এসে ওই গৃহবধূ পুরো বিষয়টি তাঁর এক দাদাকে জানান। ওই দাদা ১০০ ডায়ালে ফোন করতেই মেলে ফল। পূর্ব কলকাতার নারকেলডাঙা থানার পুলিশ আধিকারিকরা গৃহবধূকে উদ্ধার করে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান। পুত্রবধূর অভিযোগের ভিত্তিতেই ধর্ষণের অভিযুক্ত শ্বশুরকে রবিবার পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

    পুলিশ জানিয়েছে, নারকেলডাঙা থানা এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতিতা তরুণীর মা-বাবা দিল্লির বাসিন্দা। নারকেলডাঙার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে তাঁরা মেয়ের বিয়ে দেন। ওই যুবক শিয়ালদহে একটি দোকানে কাজ করে। তাঁর বাবা সবজি বিক্রি করে। পুলিশের কাছে ওই তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই কেউ বাড়ি না থাকার সুযোগ নিয়ে একাধিকবার তাঁর উপর চড়াও হয় তাঁর শ্বশুর। সে পুত্রবধূকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। যৌন অত‌্যাচারের শিকার হয়ে ওই গৃহবধূ কেঁদে ফেলে কখনও স্বামী, কখনও বা পরিবারের অন‌্যদের বিষয়টি জানান। কিন্তু সমস‌্যার সুরাহা করার বদলে তাঁর উপর চলে অত‌্যাচার। পরিবারের কর্তার দুষ্কর্ম যাতে বাড়ির বাইরে না যায়, তার জন‌্য তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। দুপুরে বাড়িতে কেউ ছিলেন না। দুপুরের আগেই বাড়িতে ফিরে এসে পুত্রবধূকে তেল মালিশ করতে ডাকে শ্বশুর। তিনি তেলের বাটি নিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করার পরই ওই ব‌্যক্তি উঠে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়।

    তারপর তাঁর উপর ফের চলে যৌন নির্যাতন। ধর্ষণের ঘটনার পর গৃহবধূ কোনওমতে ঘরের বাইরে বেরিয়ে যান। এক তুতো দাদাকে ফোন করে পুরো ঘটনাটি জানান। এর পর বাড়ি থেকে ‘পালিয়ে’ গিয়ে এক আত্মীয়াকে সঙ্গে নিয়ে বেলেঘাটা ও নারকেলডাঙা অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। গৃহবধূর ওই দাদা বুঝতে পারছিলেন না তাঁর বোন কী করতে চলেছেন। তাই ১০০ ডায়ালে ফোন করে পুরো ঘটনাটি পুলিশকে জানান। প্রথমে বেলেঘাটা থানার পুলিশ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার পর ঠিকানা বুঝে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এর পর ওই যুবকের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জেনে পুলিশ গৃহবধূর সন্ধান চালিয়ে তাঁকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে। পুলিশ তাঁকে নারকেলডাঙা থানায় নিয়ে আসে। মেডিক‌্যাল পরীক্ষার শেষে গৃহবধূ নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তারই ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর শ্বশুরকে বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করে। আদালতে নির্যাতিতা গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন। অভিযুক্ত শ্বশুরকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)