• জামিন পেলেন যাদবপুরের প্রাক্তনী হিন্দোল, ব্রাত্যের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় স্পেনফেরত গবেষককে
    আনন্দবাজার | ১৮ আগস্ট ২০২৫
  • শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদার জামিন পেলেন। সোমবার আলিপুর আদালত স্পেনফেরত ওই গবেষককে জামিন দিয়েছে। সোমবার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল হিন্দোলকে। তাঁর আইনজীবী গোপাল হালদার আদালতে জামিনের পক্ষে সওয়াল করে জানান, মামলায় নতুন কোনও অগ্রগতি নেই। তিনি জানান, তাঁর মক্কেল স্পেনে থাকেন। কলকাতায় থাকেন না। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেশে ফেরার পরেই গ্রেফতার করা হয়। সরকারি কৌঁসুলি অবশ্য হিন্দোলের জামিনের বিরোধিতা করেন।

    পুলিশের তরফে আদালতে দাবি করা হয়েছিল, হোয়াট্‌সঅ্যাপে যাদবপুরের প্রাক্তন পড়ুয়াদের মেসেজ করে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলেছিলেন হিন্দোল। বিষয়টি সবিস্তার কেস ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি। পাল্টা হিন্দোলের আইনজীবী আদালতে বলেন, “ছেলেটার শিক্ষাগত যোগ‍্যতা দেখুন, ভদ্রলোকের ছেলে। ঘটনার সময় সশরীরে উপস্থিতও ছিল না।” দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর ১০০০ টাকার বন্ডে হিন্দোলকে জামিন দেন বিচারক। হিন্দোলের আইনজীবীর তরফে আর্জি জানানো হয়, এমন কোনও কঠিন শর্ত যেন আরোপ না-করা হয়, যাতে ওই গবেষকের পড়াশোনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন বিচারক।

    গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্থা এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। তাতে নাম জড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোলের। গত বুধবার স্পেন থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার দূরে স্পেনে বসে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর উপর হামলার ছক তৈরি করেন হিন্দোলই। যাদবপুরের পড়ুয়াদের সঙ্গে হোয়াট্‌সঅ্যাপ মারফত হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে দেন তিনি।

    যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে বি-টেক করেছিলেন হিন্দোল। বর্তমানে তিনি স্পেনে গবেষণারত। স্পেন থেকেই বুধবার দেশে ফিরেছিলেন। দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁকে আটক করা হয়। হিন্দোলের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করা ছিল। সেই কারণে অভিবাসন বিভাগ তাঁকে আটকায়। পরে তাঁকে হেফাজতে নেয় দিল্লি পুলিশ। তার পর কলকাতা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। যাদবপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের একটি দল ট্রানজ়িট রিম্যান্ডে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসে।

    শুক্রবার ধৃত হিন্দোলকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। তাঁর আইনজীবী মক্কেলের জামিনের জন্য আবেদন করেন। তবে সে দিন তা খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারক। ওই শুনানিতে হিন্দোল প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেছিলেন, ‘‘কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে হামলায় আফতাব আনসারিও সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। দুবাইয়ে বসে ষড়যন্ত্র করেন। তাঁর নির্দেশেই পুরো ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় কয়েক জন অভিযুক্তকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করেছিল। তার পরেই বিদেশে বসবাসকারী ওই ঘটনার মূল চক্রী আফতাব আনসারির নাম জানা গিয়েছিল। পরে দুবাই থেকে আফতাব আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)