নীতিগত কারণেই মেট্রো রুট উদ্বোধনে যাচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৯ আগস্ট ২০২৫
শুক্রবার তিনটি নতুন মেট্রো রুটের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেড (গ্রিন লাইন), হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (রুবি ক্রসিং) থেকে বেলেঘাটা (অরেঞ্জ লাইন), এবং নোয়াপাড়া থেকে জয় হিন্দ বিমানবন্দর (ইয়েলো লাইন)—এই তিনটি রুট উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজে কলকাতায় আসছেন। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকছেন না।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানালেও তিনি সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নীতিগত কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে সম্প্রতি যেভাবে বাংলাভাষী মানুষদের হেনস্থা করা হচ্ছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।
দলীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, এই সমস্ত ঘটনার পেছনে রয়েছে বিজেপির মদত। সেই সঙ্গে কেন্দ্র সরকার বাংলাকে আর্থিকভাবে অবহেলা করছে এবং ভাষা-সংস্কৃতির দিক থেকেও চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। এই প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে না যাওয়াকে রাজনৈতিকভাবে স্বাভাবিক সিদ্ধান্ত বলেই ব্যাখ্যা করছে শাসক দল।
তৃণমূল শিবিরের আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখনই এই সমস্ত মেট্রো প্রকল্পের পরিকল্পনা ও অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে নানা কারণে এই প্রকল্পগুলির কাজ থমকে ছিল। রাজ্যে ভোটের আগে এই প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা তুলতে চাইছে বিজেপি, এমন অভিযোগও তুলেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মাত্র নিয়মরক্ষার জন্য – এই বক্তব্যও উঠে এসেছে দলীয় মহল থেকে।
শুধু আমন্ত্রণের সীমায় মুখ্যমন্ত্রীকে আটকে রেখে প্রকল্পের যাবতীয় কৃতিত্ব নেওয়ার প্রয়াসকে গুরুত্ব দিয়েই তৃণমূল এবার পাল্টা প্রচারের রূপরেখা তৈরি করেছে। দলের তরফে রাজ্যজুড়ে তুলে ধরা হবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেলমন্ত্রী হিসেবে বাংলা তথা দেশের জন্য কী কী উদ্যোগ ছিল, কী কী নতুন প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল, কোন কোন এলাকায় নতুন রেলপথ তৈরি হয়েছিল, এবং কতটা কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছিল সেই সময়।
এই প্রচারের মূল লক্ষ্য হল নতুন প্রজন্মের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর রেলমন্ত্রিত্বকালীন অবদান তুলে ধরা। দলের বিশ্বাস, এই ইতিহাস অনেকের অজানা। আর সেই অজানা অধ্যায়ই সামনে আনতে চায় তারা। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, পাহাড় থেকে সুন্দরবন, সবত্র মমতার রেল পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল, সেই তথ্য ও প্রমাণ দিয়ে প্রচার চালাবে তৃণমূল কংগ্রেস।