মহানগরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে, বৃষ্টির কারণে নভেম্বর পর্যন্ত সতর্ক কলকাতা পুরসভা
বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চলতি বছর এখনও পর্যন্ত সেভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়নি কলকাতায়। তবে জুলাই মাসে লাগাতার বৃষ্টি চিন্তা বাড়িয়েছিল কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তাদের। কিন্তু আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গু পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে আছে বলে দাবি পুরসভার। গত বছরের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি দুশ্চিন্তাজনক নয় বলে দাবি পুরসভার। স্বাস্থ্যবিভাগের দাবি, এবারও বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হয়েছে। লাগাতার নোটিস ধরানো হয়েছে নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের। সবমিলিয়ে এবারও আপাতত নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা গিয়েছে মশাবাহিত রোগ সংক্রমণ। শহরবাসী সচেতন না হলে এই ধারাবাহিক সাফল্য মিলত না বলেই মনে করছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা। পাশাপাশি, চলতি বছর ডেঙ্গু সংক্রমণের নিরিখে শহরের সাতটি ওয়ার্ডকে ‘স্পর্শকাতর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেগুলি মূলত দক্ষিণ কলকাতা এলাকা। সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেই দাবি। সোমবার শহরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্যবিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ।
গত জুনের শেষ থেকে জুলাইয়ের গোটা মাস ভালো পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে শহরে। চলতি মাসেও মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। পুরকর্তাদের দাবি, মনে করা হয়েছিল আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন শহরে। সার্বিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। যদিও আমাদের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। শিথিলতা দেখানো চলবে না। পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত শহরে ২৫৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে ২০২৫ সালের এই সময়কালে আক্রান্ত হয়েছেন ২৯০ জন। যদিও ২০২৩ সালের এই একই সময় শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬৭২ জন। অর্থাৎ ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছর প্রায় ৫৭ শতাংশ প্রকোপ কম। তবে বৃষ্টি নিয়ে চিন্তা থাকছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। তাঁদের বক্তব্য, এখনও বর্ষা সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত চলবে। এই অবস্থায় লাগাতার নজরদারির উপরই জোর দিচ্ছে পুরসভা। ভেক্টর কন্ট্রোলের যাবতীয় কাজ জোরকদমে চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বেশি। ২০২৩ সালে শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। কারণ সেই বছর আগস্টের তুলনায় বছর শেষে ডেঙ্গু সংক্রমণ বহুগুণ বেড়ে গিয়েছিল। তাই সেটিকেই মাপকাঠি ধরা হয়েছে। ভয় এখনও কাটেনি। গত বছর সন্তোষজনক অবস্থা ছিল বলেই যে এবছরও তাই থাকবে, তেমন ভাবার কোনও কারণ নেই। তবে আমরা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’