ছেলেকে ছেড়ে দিন, বাড়িতে নিয়ে আসব, আতঙ্কিত অভিভাবকদের ফোন স্কুলে
বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৫
শ্যামলেন্দু গোস্বামী, মধ্যমগ্রাম: সাতসকালেই অভিভাবক ও একাদশ-দ্বাদশের পড়ুয়াদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অভয় বার্তা পাঠিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানে লেখা হয়েছিল, ‘বিদ্যালয় সম্পূর্ণ নিরাপদ। আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। স্বাভাবিকভাবে স্কুল চলবে।’ কিন্তু তখনও রবিবার রাতে স্কুলের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং তাতে একজনের মৃত্যুর ঘটনা ততটা ছড়িয়ে পড়েনি। কী কারণে স্কুল এমন বার্তা দিল, তা নিয়ে খোঁজখবরের মধ্যেই সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়েছেন অভিভাবকরা। তারপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা সংবাদমাধ্যম সহ নানা সূত্র থেকে জেনে নিয়েছেন স্কুলের সামনে বিস্ফোরণের কথা। তাতেই বহু অভিভাবক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ স্কুলের শিক্ষকদের মেসেজ করে বলেন, ‘স্যার, খুব ভয় লাগছে। ছেলেকে ছেড়ে দিন। বাড়ি নিয়ে আসব।’ বেশ কয়েকজন অভিভাবকের থেকে এমন মেসেজ বা ফোন কল পান শিক্ষকরা। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের অভয় বাণীতে আশ্বস্তও হয়েছেন অনেকে।
রবিবার রাত ১২টা ৫৭ মিনিটে মধ্যমগ্রাম স্টেশন সংলগ্ন বয়েজ হাইস্কুলের সামনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। মধ্যমগ্রাম তো বটেই, গোটা জেলার মধ্যেও যথেষ্ট নামডাক রয়েছে এই স্কুলের। পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২৭০০। অন্যান্য দিনে কমবেশি ১৫০০ পড়ুয়া স্কুলে আসে। কিন্তু এদিন বিস্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়ার কারণে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কিছুটা হলেও কমেছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। সোমবার ১১২৬ জন ছাত্র স্কুলে এসেছিল। তাঁদের অনেকের চোখেমুখে ছিল ভয়ের ছাপ। কেউ কেউ স্কুলের মূল দরজার ফাঁক দিয়ে বিস্ফোরণস্থলে উঁকি দিয়েছে। কেউ স্কুলের বাইরে গিয়ে ঘটনাস্থল দেখতে গেলে শিক্ষকরা তাদের থামিয়েছেন। অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা বা প্রধান শিক্ষক ফোন করে স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডঃ আশুতোষ ঘোষ বলেন, ‘এদিন ১১২৬ জন ছাত্র স্কুলে এসেছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় উপস্থিতির হার কিছুটা কম। তবে সকালেই আমরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দিয়েছি। কারণ, বিচ্ছিন্ন ঘটনাটি ঘটেছে স্কুলের বাইরে। অনেক অভিভাবক-অভিভাবিকা ফোন করছেন। তাঁদের আমরা বিষয়টি বুঝিয়ে বলছি।’ সেই সঙ্গে স্কুলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আধুনিক সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী রথীন ঘোষকে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।