ঘরে-বাইরে জলে-জল। প্রসব-যন্ত্রণায় কাতর প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য খোঁজ করা হয় সরকারি স্পিড বোট বা নৌকার। অভিযোগ, কোনওটাই মেলেনি। শেষ পর্যন্ত ৭০০ টাকায় ভাড়া করা হয় নৌকা। তাতে পূজা কুমারী নামে এক মহিলাকে আনা হয় ভূতনি সেতুর কাছে। দাবি, প্রসূতিকে নৌকায় ওঠানোর আগেই ফোনে বিষয়টি জানানো হয় স্থানীয় আশা কর্মীকে। তিনি জানান ‘ভূতনি সেতুর কাছে অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে’।
বাড়ি থেকে আধ ঘণ্টা নৌকায় আসার পরে ভূতনি সেতুর কাছে নৌকাতেই চড়া রোদে আর এক ঘণ্টা পড়ে থাকলেন পূজা। পরিবারের তরফে সেতুতে থাকা পুলিশ ক্যাম্পেও বিষয়টি জানানো হয়। স্থানীয় মাঝি ও লোকজনের সহায়তা নিয়ে নৌকা থেকে বধূকে নামিয়ে টোটোয় করে সেতুর মুখে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স এসে মহিলাকে নিয়ে যায় মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে। বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ ওই মহিলা পুত্র সন্তান প্রসব করেন। মা ও শিশু ভাল আছে।
দক্ষিণ চণ্ডীপুরের কিসানটোলার বাসিন্দা পূজা কুমারীর স্বামী কৌশল মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি স্পিড বোট না মেলায় ৭০০ টাকা দিয়ে নৌকা ভাড়া করতে হয়। আশা কর্মী জানিয়েছিলেন ভূতনি সেতুর কাছে অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। কিন্তু ছিল না। চড়া রোদে এক ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য প্রসব যন্ত্রণায় কাতর স্ত্রীকে নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়।’’ একই বক্তব্য বধূর সঙ্গে থাকা শাশুড়ি অনিতা মণ্ডলেরও। মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার পরেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিষয়টি জানিয়েছিলাম এবং অ্যাম্বুল্যান্স গিয়ে ওই মহিলাকে নিয়ে আসে।’’ বিকেলে মালদহ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘‘সেই সময় একটি সাপে কাটা রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালে এসেছিল। সেই জন্য ভূতনি সেতুর কাছে ওই প্রসূতিকে আনতে যেতে আধ ঘণ্টা সময় লেগেছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ বন্যা কবলিত ভূতনির তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তঃসত্ত্বাদের বাড়ি বা এলাকা থেকে ভূতনি সেতু পর্যন্ত নিয়ে আসার জন্য দু’টি স্পিড বোট রয়েছে। এ দিন দুপুরে উত্তর চণ্ডীপুরের কাটাবাঁধ থেকে এক প্রসূতিকে স্পিড বোট করে নিয়ে আসা হয় ভূতনি সেতু পর্যন্ত এবং তার পর তাকে সেতু থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতলে পৌঁছে দেওয়া হয়। প্রসূতিদের এনে মথুরাপুর মডেল স্কুলের ত্রাণশিবিরে রাখা হচ্ছে। শিবিরে ভূতনির চার প্রসূতি রয়েছেন