• তাজপুর থেকে আদানি-‘বিদায়’! নতুন আগ্রহপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়ায় অনুমোদন রাজ্যের
    আনন্দবাজার | ১৯ আগস্ট ২০২৫
  • ইঙ্গিত এবং ঘোষণা ছিল আগেই। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ নিয়ে নতুন করে আগ্রহপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়ায় অনুমোদন দিল রাজ্য সরকার। সূত্রের মতে, আগ্রহপত্র দেখে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার কথা। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, নতুন করে আগ্রহপত্র ডাকার সিদ্ধান্তের অর্থ, বন্দর নির্মাণের যে দায়িত্ব আদানি গোষ্ঠী পেয়েছিল, আগামী দিনে তা আর তাদের হাতে থাকবে না।

    বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তাজপুরে আরএফপি (রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজ়াল) দেওয়ার প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।” প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, এর পরে নতুন করে আগ্রহপত্র ডাকা হবে। সেখানে যাঁরা অংশগ্রহণ করবেন, তাঁদের প্রস্তাব খতিয়ে দেখে তাজপুর প্রকল্পের জন্য দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে। যদিও এ দিনই রাজভবন থেকে বেরোনোর সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নানা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। কিছুই হবে না। বন্দরে কাঁচামাল আনার পথটা কোথায়? কোনও সংযোগ হয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী তা হেলিকপ্টারে করে আনবেন?”

    সূত্রের দাবি, তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে রাজ্য দরপত্র ডেকেছিল ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর। তাতে আদানি গোষ্ঠী (আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জ়োন) ০.২৫% রাজস্ব ভাগের প্রস্তাব দেয়। জিন্দল গোষ্ঠী দিয়েছিল ০.২৩% রাজস্ব ভাগের প্রস্তাব। দর বেশি থাকায় আদানিরা প্রকল্পের দায়িত্ব পায়। ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর ‘লেটার অব ইনটেন্ট টু অ্যাওয়ার্ড’ (এলওআইএ) আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির পুত্র কর্ণ আদানির হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁদের সঙ্গে নবান্নের দূরত্ব বাড়ে। গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জুনে দাবি করা হয়, রাজ্য আদানিদের এলওআইএ দেওয়ার পরেও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বা কাজ শুরুর ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।

    বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, শর্তের দিক থেকে আগের দরপত্রের সঙ্গে নতুনটির ফারাক থাকতে পারে কি? এই নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা জানার এক্তিয়ার আপনাদের নয়, এটা পুরোপুরি টেকনিকাল বিষয়। মুখ্যসচিব বলে দিয়েছেন।” ঘটনাচক্রে, বিরোধীরা কেউ কেউ মনে করাচ্ছেন, সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে টাটা ও রাজ্যের চুক্তি প্রকাশের দাবি করেছিলেন মমতা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “সিঙ্গুরে টাটা ও রাজ্যের মধ্যে যে চুক্তি হয়, তাতে গোপনীয়তা (‘ট্রেড সিক্রেট’) কেন থাকবে, তা নিয়ে উনি (মমতা) সরব হন। এখন তাজপুর বন্দরের সময়ে বলছেন— কী হবে, না-হবে, তা প্রকাশ্যে আনার দরকার নেই!’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)