তীব্র জ্বরে আক্রান্ত শিশুকে ভর্তি না করে বহির্বিভাগে, মৃত্যু
আনন্দবাজার | ১৯ আগস্ট ২০২৫
কয়েক দিন ধরেই প্রবল জ্বর। কোনও ভাবে না কমায় ছ’বছরের ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে যান পরিজনেরা। অভিযোগ, জরুরি বিভাগে গেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বহির্বিভাগে। তীব্র রোদে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে মৃত্যু হল ওই শিশুর। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে।
তীব্র জ্বরে আক্রান্ত শিশুকে জরুরি বিভাগে অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে কেন বহির্বিভাগে পাঠানো হল? উঠছে এই প্রশ্ন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, মৃত শিশুটির নাম শাকিব। হাওড়ার বাঁকড়ার বাসিন্দা ওই শিশুটি বেশ কয়েক দিন ধরে প্রবল জ্বরে আক্রান্ত ছিল। এ দিন সকালে জ্বর আরও বাড়ায় নেতিয়ে পড়তে থাকে শাকিব। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রথমে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে যান। সেখান থেকে তাঁদের কলকাতা মেডিক্যাল, এসএসকেএম বা বি সি রায় শিশু হাসপাতালে যেতে বলা হয় বলেই দাবি পরিজনদের। সেই মতো বেলা ১১টায় তাঁরা বি সি রায় হাসপাতালে পৌঁছন। শিশুটির এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘হাসপাতালে বিভিন্ন ঘরে ঘুরতে হচ্ছিল।’’
শাকিবকে নিয়ে জরুরি বিভাগেও যান পরিজনেরা। অভিযোগ, জ্বরে আচ্ছন্ন শিশুকে না দেখেই বহির্বিভাগে দেখানোর কথা বলা হয়। শিশুটির মায়ের দাবি, ‘‘ছেলের গায়ের তাপ ক্রমশ যেন বাড়ছিল। বার বার বললেও, কেউ কিছু করলেন না।’’ পরিজনদের অভিযোগ, বহির্বিভাগে গেলে টিকিট করিয়ে আনতে বলা হয়। টিকিট করিয়ে তীব্র গরম ও রোদের মধ্যেই লাইনে শাকিবকে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তার মা। তখনই মৃত্যু হয় শাকিবের। চিকিৎসা করাতে এসে তার মৃত্যু হবে, ভাবতেই পারছেন না পরিজনেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘জরুরি বিভাগে ভর্তি করে নিলে এ ভাবে ছেলেটাকে হারাতে হত না।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, শাকিবকে জরুরি বিভাগের পাশে ফিভার ক্লিনিকে পাঠানো হয়। কিন্তু কয়েক দিন ধরে জ্বর কমছে না ও দেহের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে শোনার পরেও কি শিশুটিকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না? হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপকুমার পাল বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগে প্রাথমিক ভাবে শিশুটিকে দেখে সঙ্কটজনক বলে মনে হয়নি। তাই ১০ মিটার দূরত্বের ফিভার ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছিল।’’ কিন্তু জরুরি বিভাগে পর্যবেক্ষণের জন্য ভর্তি না করে অন্যত্র পাঠানো হল কেন? অধ্যক্ষের দাবি, ‘‘কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তা দেখা হচ্ছে।’’