আজকাল ওয়েবডেস্ক: আচমকা স্কুলের সামনে বোমা বিস্ফোরণ, মৃত্যু। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল মধ্যমগ্রামে। ধ্যমগ্রাম বিষ্ফোরণ মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। তদন্তে নেমে যে তথ্য সামনে এনেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা, ঘুরে গিয়েছে ঘটনার মোড়। মঙ্গলবার জানা গিয়েছে, ঘটনায় এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে ,আটক করা মহিলার সঙ্গে মৃত যুবকের ইনস্টাগ্রামে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দাবি, গত ছ'মাস ধরে তাঁদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল না। পুলিশের একটি সূত্র জানায় ইউটিউব দেখে ওই যুবক নিজেই এই বিস্ফোরক বানিয়েছিল। ঘটনার আগে সে হরিয়ানা থেকে এরাজ্যে আসে। এসটিএফের অনুমান, ওই রাজ্যেই বিস্ফোরক জোগাড় করে সে বেশ কিছুটা বানিয়ে এনে বাকি অংশটা এরাজ্যে জোড়ে বা অ্যাসেম্বেল করে। তার মোবাইল ফোনটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের বাবা এরাজ্যে এসেছেন ছেলের দেহ ময়নাতদন্তের পর নিয়ে যাওয়ার জন্য। তথ্য, এই যুবক পূর্বেও এসেছিল এই মধ্যমগ্রাম এলাকায় তার বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে।
মূল ঘটনার সূত্রপাত রবিবার গভীর রাতে। ঘটনাটি ঘটে মধ্যমগ্রাম হাই স্কুলের সামনে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, মৃত তরুণের নাম, সচ্চিদানন্দ মিশ্র। ২৫ বছর বয়সি তরুণ আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। রবিবার রাত ১টা নাগাদ মধ্যমগ্রাম হাই স্কুলের সামনে দিয়েই ওই তরুণ যাচ্ছিলেন। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তরুণের হাতেই একটি ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগেই সম্ভবত বোমা ছিল। সেই ব্যাগ থেকেই বিস্ফোরণ হয়।
বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বিস্ফোরণের জেরে গুরুতর আহত হন ওই তরুণ। তাঁকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা শুরু হলেও, তরুণের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার খবর পেয়েই গভীর রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছন বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার অতীশ বিশ্বাস, বারাসতের এসডিপিও বিদ্যাগর অজিঙ্ক অনন্তও। ঘটনাটি ঘিরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার সকালেই জাতীয় তদম্তকারী সংস্থা এনআইএ-র আধিকারিকেরা হাসপাতালে যান। বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গভীর রাতে ওই তরুণ কেন স্কুলের সামনে ঘোরাঘুরি করছিলেন, কী উদ্দেশ্য ছিল তাঁর, ব্যাগে বোমা কেন ছিল, তা ঘিরেও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে।
মঙ্গলবারেই সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, মূলত প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতেই তিনি এসেছিলেন সেখানে। হাতের ব্যাগের মধ্যেই ভরে এনেছিলেন বোমা। সূত্রের খবর, যুবকের নিশানায় ছিলেন মূলত প্রেমিকার স্বামী। তবে তার আগেই কোনওভাবে বোমা বিস্ফোরোণের ঘটনা ঘটে, তার বলি হন যুবক নিজেই। ঘটনার তদন্ত চলছে।