• উৎসবের মরশুমে অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করার চেষ্টা,উদ্ধার বিপুল পরিমান জাল নোট ...
    আজকাল | ১৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপূজা এবং দীপাবলী উৎসবের মরশুমে দেশজুড়ে জালনোট ছড়িয়ে দেওয়ার আগে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার ক্রাইম কন্ট্রোল  ইউনিটের সহযোগিতায় সোমবার রাতে ফরাক্কা থানার পুলিশ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের হেফাজত থেকে উদ্ধার হয়েছে ৯৯৫ টি জাল ৫০০ টাকার নোট। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ,ধৃত এক অভিযুক্তের নাম খালিফ শেখ। তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলায় এবং অপরজন মহম্মদ জাফরের বাড়ি কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু শহরে সেন্ট থমাস টাউনে। ধৃত ব্যক্তিদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করে মঙ্গলবার তাদের আদালতে পেশ করা হচ্ছে। জাল নোট পাচারের এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িয়ে রয়েছে পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। 

    এসডিপিও (ফরাক্কা) শেখ শামসুদ্দিন বলেন,' কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট থেকে প্রাপ্ত গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে সোমবার রাত প্রায় ন'টা নাগাদ  ফরাক্কা থানার পুলিশ মালদার দিক থেকে আসা একটি অটোকে নিউ ফারাক্কা মোড়ের কাছে আটক করে। সেই অটোতে খালিফ শেখ এবং মহম্মদ জাফর নামে দুই যুবক ছিল। ধৃতদের সঙ্গে থাকা ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে জাল ৫০০ টাকার ৯৯৫ টি নোট।'

    তিনি জানান ,'প্রাথমিক তদন্ত আমরা জানতে পেরেছি ধৃত যুবকরা মালদা জেলার কালিয়াচক থেকে এই জাল নোট নিয়ে আসছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কর্ণাটক সহ আরও কয়েকটি রাজ্যে এই জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার।' জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে কর্নাটক রাজ্যের বাসিন্দা মহম্মদ জাফর বিমানে করে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয়। এরপর সে যোগাযোগ করে সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা খালিফ শেখের সঙ্গে। সূত্রের খবর,দিন দুই আগে খালিফ  এবং জাফর একসঙ্গে কালিয়াচকে গিয়ে সেখানকার এক জাল নোট কারবারির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল নোট সংগ্রহ করে। এরপর যে যার নিজেদের গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। সোমবার রাতে দু'জনে একসঙ্গে মালদা জেলা থেকে অটো করে ফরাক্কায় আসে। এরপর সেখান থেকে ট্রেন ধরে তাদের ঝাড়খণ্ডের বারহারোয়া হয়ে অন্য কোনও জায়গায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তার আগেই দু'জনে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। 

    নিউ ফরাক্কা মোড়ে পুলিশ অটোটি আটক করতেই তার ভিতরে বসে থাকা দু'জনেই পুলিশ আধিকারিকদের দিকে ভারী কিছু ছুড়ে মেরেছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল পুলিশকে আঘাত করে সেই সুযোগে জাল নোটের ব্যাগ নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার। 

    কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের আধিকারিকরা খালিফ এবং জাফরের পিছু ধাওয়া করতে থাকেন। এরপর কিছুটা দূর গিয়ে দু'জনেই হাঁপিয়ে পড়লে পুলিশ তাদের ধরে থানায় নিয়ে আসে এবং ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় জাল নোটগুলি। 

    জেলা পুলিশের ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন , আসন্ন দুর্গাপুজো এবং দীপাবলির উৎসবের মরশুমে বাজারে বিপুল টাকার লেনদেন হবে।  ধৃত যুবকেরা পরিকল্পনা করেছিল বাজারে অর্থের যোগান বাড়লে সেই সময় তারা গোপনে এই জাল নোট বাজারে ছড়িয়ে দেবে।

    পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে , খালিফ দীর্ঘদিন ধরেই জাল নোটের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সে মূলত জাফরকে পথ দেখিয়ে কালিয়াচকের জাল নোটের কারবারির কাছে নিয়ে যাওয়া এবং তারপর 'সেফ প্যাসেজ' করে দিয়ে বেঙ্গালুরু ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল।

    অন্যদিকে অপর একটি ঘটনায় সোমবার গভীর রাতে লালগোলা থানার পুলিশ চুয়াপুকুর গ্রামে উমেশা বিবি নাম এক মহিলার বাড়িতে হানা দিয়ে তার জামাই শাহজাহান শেখের কাছ থেকে ৩০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়া মাদকের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর শাহজাহান  দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল। পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য গত বেশ কিছুদিন ধরে ওই যুবক শ্বাশুড়ির বাড়িতেই লুকিয়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)