নিরুফা খাতুন: গত দেড়মাস আগেই পথ কুকুর এবং বিড়ালদের জন্য একটি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করেছিলেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। হঠাৎ সেই বাড়ি থেকেই বেরতে শুরু করে পচা গন্ধ। সময় যত গড়ায় গন্ধও তত তীব্র হতে থাকে। সোমবার মধ্যরাতে এক প্রকার জোর করেই এলাকার মানুষজন ওই আশ্রয় কেন্দ্রে ঢোকেন। ওই কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতেই কার্যত চমকে ওঠেন। দেখেন ওই আশ্রয় কেন্দ্রের ভিতরে ছড়িয়ে একাধিক কুকুর-বিড়ালের মৃতদেহ। চারপাশে চাপ চাপ রক্ত। শুধু তাই নয়, একাধিক কুকুর স্তাবকের শরীরের অংশও কাটা অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় মানুষজন। আর এরপরেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার পর্ণশ্রী থানার অন্তর্গত সাগর মান্না রোডে। ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ঘটনার খবর দেওয়া হয় পর্ণশ্রী থানার পুলিশকে। ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কেন এই ঘটনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কোন অসৎ কাজের উদ্দেশ্যেই ওই শেল্টার চালাত অভিযুক্তরা। এমনকী কুকুর-বিড়ালের দেহাংশ পাচার করা হতো বলেও অভিযোগ। ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সঞ্চিতা মিত্রের সন্দেহ, সম্ভবত কুকুর বিড়ালের মাংস পাচার করা হতো। যদিও পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্যদিকে ঘটনার পেয়েই মঙ্গলবার সকালে এলাকায় বিক্ষোভ দেখায় একাধিক পশুপ্রেমী সংগঠন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মান্না রোডের বাড়িতে দেড়মাস আগেই ওই আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়। বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তা চালু করেন। সবকিছু ঠিকই চলছিল। সম্প্রতি ওই বাড়ি থেকে পচাগন্ধ ছড়াতে শুরু করে। স্থানীয় মানুষজন ওই পশু আশ্রয় কেন্দ্রের মালিককে জিজ্ঞেসও করেন। অভিযোগ, এই বিষয়ে কোনও উত্তর দিতে চাননি বাড়ির মালিকরা। সময়ের সঙ্গে গন্ধ আরও ছড়িয়ে পড়ে। এরপরেই সোমবার রাতে এলাকার মানুষজন একপ্রকার জোর করে আশ্রয় কেন্দ্রের ভিতরে ঢোকেন। দেখতে পান ভিতরে একাধিক মৃত কুকুর এবং বিড়ালের বাচ্চা পড়ে রয়েছে। বেশ কয়েকটি কুকুর বাচ্চার শরীরের অংশও একেবারে কাটা অবস্থায় রয়েছে।
কাউন্সিলার সঞ্চিতা মিত্র আরও জানিয়েছেন, ‘১৫ থেকে ১৬টি কুকুর বিড়াল আটক অবস্থায় ছিল। সেগুলিকে উদ্ধার করা হচ্ছে।” অন্যদিকে পর্ণশ্রী থানার তরফে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সারমেয়দের আশ্রয় দেওয়ার নামে অবৈধ কোনও কাজ করা হতো? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেহাংশ পাচারের সঙ্গেও অভিযুক্তরা জড়িত কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।