• শিশুর শরীরে সাড়ে ৩ ফুটের বিষধর সরীসৃপের কামড়! বুঝতে না পেরে ফেরাল ৪ হাসপাতাল, বাঁচালেন কলকাতার ডাক্তাররা
    প্রতিদিন | ১৯ আগস্ট ২০২৫
  • অভিরূপ দাস: তিন সাড়ে তিন ফুটের সরীসৃপ। যার জন‌্য ঘুরতে হল চার-চারটে হাসপাতাল। বিষটাও যে ঢেলেছিল মোক্ষম! দক্ষিণ শহরতলির এক বেসরকারি হাসপাতালে অবশেষে প্রাণে বাঁচল নদিয়ার বেথুয়াডহরির ন’বছরের শিশু।

    গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রস্রাব করতে বাড়ির বাইরে গিয়েছিল। আচমকা পায়ে চিনচিনে একটা ব‌্যথা। কিছুক্ষণ পরেই শুরু শ্বাসকষ্ট। পড়ে যেতে থাকে চোখের পাতা। দ্রুত হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান বাড়ির লোকেরা। তিনি ধরতেই পারেননি অসুখটা। সেখান থেকে সাবডিভিশনাল হাসপাতাল। পরে কৃষ্ণনগর হাসপাতাল ঘুরে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক‌্যাল কলেজ।

    এনআরএসের চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন, ক্ষমতা হারাচ্ছে ফুসফুস! বাঁচাতে হলে ভেন্টিলেশন প্রয়োজন শিশুটির। সেসময় খালি ছিল না পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেশন। অবশেষে ওই বেসরকারি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসার পর  নতুন জীবন পেল ন’বছরের আদিত‌্য (নাম পরিবর্তিত)। বেসরকারি ওই হাসপাতালের ক্লিনিকাল ডিরেক্টর ডা. সংযুক্তা দে জানিয়েছেন, দ্রুত শিশুটিকে দেখে বুঝতে পারি রেসপিরেটরি প‌্যারালিসিস হচ্ছে শিশুটির। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। দেওয়া হয় এভিএসও।

    তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘‘শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারি বাচ্চাটি সাপের বিষের প্রতিষেধক বা এভিএস পেয়েছিল আগে। তবে তার ডোজ বোধহয় যথেষ্ট নয়।’’ কারণ? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাচ্চাটির পায়ের আঙুলে আমরা চারটি পিন ফোটানোর মতো ফুটো দেখেছি। অর্থাৎ বার দুয়েক কামড় দিয়েছে কালাচ! ঢেলেছে অনেকটা বিষ। কী করে আন্দাজ করা গেল কালাচ সাপই কামড়েছে শিশুটিকে?

    সর্প বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভারতে পাওয়া ৩০০-র অধিক সাপের মধ্যে ৫০টি বিষধর। এর মধ্যে বাংলায় মূলত কেউটে, চন্দ্রবোড়া, ফুরসা, কালাচের কামড়ে মৃত‌্যুর হার সর্বাধিক। বাংলার সাপের বিষেরও রয়েছে শ্রেণিবিন‌্যাস। কিছু সাপের বিষ নিউরোটক্সিন (কালাচ, শাঁখামুটি) যা মূলত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আঘাত করে। অন‌্যদিকে গোখরোর বিষ সাইটোটক্সিন যা কোষপর্দাকে নষ্ট করে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)