আজকাল ওয়েবডেস্ক: রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করিয়ে রাখা লোহার বিম শরীরের উপর পড়ে মৃত্যু হল এক আট বছরের এক শিশুর। মঙ্গলবার দুপুরে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে খড়গপুর রেল স্টেশনে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে অমৃত ভারত প্রকল্পের কাজ চলছে খড়্গপুর রেল স্টেশন জুড়ে। সেই প্রকল্পের কাজ করার জন্য পাঁচ এবং ছয় নম্বর প্লাটফর্মের মাঝামাঝি একটি লোহার বিম দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। এদিন দুপুরে ওই লোহার বিম ধরে খেলছিল আট বছরের এক ভবঘুরে শিশু। খেলার সময়ই হঠাৎই বিমটি ওই তার উপর পড়ে যায়। শরীরের বেশ কিছুটা অংশ থেঁতলে যায়। খবর পেয়ে রেল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে ওই শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরীক্ষা করে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার ব্যাপারে খড়গপুর ডিভিশনের রেল পুলিশের সুপার দেবশ্রী সান্যাল বলেন, 'ঘটনা খুব মর্মান্তিক। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। ইতিমধ্যে ডিএসপি এবং ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে'।
এ বিষয়ে দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চরন জানিয়েছেন, 'স্টেশনের কিছু কিছু জায়গা খোলা থাকার সুবাদে শিশুটি ঢুকে পড়েছিল। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। যদি শিশুটির কোনও অভিভাবক পাওয়া যায় তবে রেলের আইন অনুযায়ী তাঁকে আমরা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেব।'
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এক্ষেত্রে অনেকেই রেলের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের কথায়, যদি স্টেশন এলাকায় কোনও নির্মাণ কাজ চলে, তবে সেখানে নজরদারি আরও বেশি কেন চালানো হল না? কারণ, রেল স্টেশন এমন একটি জায়গা যেখানে বহু লোক যান। বিশেষ করে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার বা নির্মাণ কাজ করার সময়, নিরাপত্তার দিক নিয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়া দরকার ছিল রেল কর্তৃপক্ষের।
কারণ, বিষয়টি এরকম নয় যে বৈধ টিকিট ছাড়া স্টেশনে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারেন না। যে কেউই রেল স্টেশনে ঢুকে পড়তে পারেন। স্থানীয়দের কথায়, এই ঘটনায় একজন শিশুর মৃত্যু হল। ভবিষ্যতে তো এরকম ঘটনা আবারও ঘটতে পারে। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, সেক্ষেত্রে কি রেল এখন থেকে সতর্ক হবে?
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেটি ভবঘুরে। বাবা ও মায়ের সঙ্গে স্টেশনেই থাকত। হঠাৎই ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবার। দুর্ঘটনার পর রেল পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আধিকারিকরা পৌঁছে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। খোঁজ নিচ্ছেন দুর্ঘটনার সময় ঠিক কী অবস্থায় ছিল বিমটি। যার জন্য এই ঘটনা ঘটে গেল। ঘটনার তদন্ত চলছে।