• কল্যাণী এইমসেই হল মৃত নার্সের ময়নাতদন্ত, চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল রিপোর্টে...
    আজকাল | ২০ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে নন্দীগ্রামের তরুণী নার্সের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে মৃত নার্সের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হল যে আত্মহত্যাই করেছেন ওই নার্স। 

    গত ১৬ আগস্ট কল্যাণী এইমস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া ওই নার্সের। নন্দীগ্রামের তরুণীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল। এরপর মৃতের পরিবারের দাবি মেনে এইমস এ ময়নাতদন্ত হয়েছিল। চার জন ফরেনসিক সিনিয়র ডাক্তারের উপস্থিতিতে ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিওগ্রাফি হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘‌Antemortem Hanging’‌ শব্দটি উল্লেখ করা রয়েছে। যার অর্থ গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হয় ওই নার্সের। পাশাপাশি তার শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ও শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল না। এই ঘটনায় ধৃত প্রেমিকের মোবাইল ফোনের খোঁজ চালাচ্ছে সিঙ্গুর থানার পুলিশ।

    প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে সিঙ্গুরে নার্সের রহস্যমৃত্যু নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। সকালে শ্রীরামপুর চণ্ডীতলায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি কর্মীরা। প্রায় ছ’ঘন্টা পর অবরোধ ওঠে। এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল সিপিএম কর্মীরাও। পরে বিকেলে তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সেখানেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে সিপিএম। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তারা।

    এটা ঘটনা, নন্দীগ্রামের বাসিন্দা বছর ২৪ এর ওই তরুণী তিন দিন আগে সিঙ্গুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নার্সের কাজে যোগ দেন। সেখানেই গত বুধবার রাতে চার তলার ঘরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ওই নার্সের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের লোক খবর পেয়ে ছুটে আসেন সিঙ্গুরে। সেখানে পৌঁছে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তরুণীর বাবা। নার্সিংহোমের দিকে আঙুল তুলে অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। পরে সিঙ্গুর থানায় মেয়ের খুনের সঠিক বিচার ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিওগ্রাফি করে ময়নাতদন্তের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

     দেহ ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে আসার পরেই শুরু হয় বচসা। শ্রীরামপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়। হাসপাতালে হাজির হয় বিজেপি কর্মীরা।

    জানা গেছে, বেঙ্গালুরুতে নার্সিং পড়তেন নন্দীগ্রামের ওই তরুণী। কোর্স শেষে বাড়ি ফিরেছিলেন কিছু দিন আগে। চাকরির খোঁজে ছিলেন বছর চব্বিশের ওই যুবতী। এক বান্ধবীর সূত্রে সিঙ্গুরের বোড়াই তেমাথা এলাকার একটি নার্সিংহোমে চাকরি পান তিনি। গত সোমবার কাজে যোগ দেন। বুধবার রাতে ওই নার্সিংহোম থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

    সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য তীর্থঙ্কর রায় ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‌মর্গের সামনের দিক দিয়ে মৃতদেহ ঢোকানো হয়েছে। সিসিটিভি ভাঙা, দরজার তালা ভাঙা, কোনও সুরক্ষা নেই। আমরা দাবি করেছি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিওগ্রাফি করে ময়নাতদন্ত করতে হবে। আজকে বিকেল পাঁচটা বেজে যাওয়ায় ময়নাতদন্ত হবে না। তথ্য প্রমাণ লোপাট যেন কোনও ভাবেই না হয় কারণ এই প্রশাসনকে আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ যতক্ষণ না এই গোটা মর্গের সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে ততক্ষণ আমরা এখানে থাকবো। এই ঘটনা কোনও ভাবেই চাপা দিতে দেব না।’‌

    ফাইল ছবি

     ‌

     
  • Link to this news (আজকাল)