অভিভাবকদের ‘গান্ধীগিরি’, স্কুলে দেরি করে আসায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে জবা ফুলে অভ্যর্থনা
প্রতিদিন | ২০ আগস্ট ২০২৫
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: নিয়মিত স্কুলে আসেন না। আসলেও অনেক দেরি করে আসেন। দীর্ঘদিন ধরেও এমন অভিযোগ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকজন শিক্ষকও দেরি করে স্কুলে আসেন বলে অভিযোগ। আজ, মঙ্গলবার ঠিক একইভাবে দেরি করে স্কুলে এসেছিলেন তাঁরা। ক্ষোভের বদলে অভিভাবক-সহ অন্যান্যরা ‘গান্ধীগিরি’ দেখালেন। গোলাপের পরিবর্তে জবা ফুল দিয়ে তাঁদের অভ্যর্থনা জানানো হল। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোস্টাল থানার সাতজেলিয়া পঞ্চায়েতের দয়াপুর এলাকায় প্রফুল্ল সেন উচ্চমাধ্যমিক হাইস্কুলে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম কালীপদ সর্দার।
ওই হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মোট ৪৫০ জন পড়ুয়া আছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ মোট ৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। গ্রুপ সি এবং ডি-র কোনও কর্মী নেই। গ্রুপ সি বিভাগে একজন ছিলেন। বর্তমানে তাঁর চাকরি চলে গিয়েছে। অভিযোগ, শিক্ষকরা সময়মতো স্কুলে আসেন না। এমনকী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও অধিকাংশ সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। একাধিক বিষয় নিয়ে অভিভাবকরা সোচ্চার হয়েছিলেন। গত কয়েক সপ্তাহ আগে প্রশ্নপ্রত্র নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালীপদ সর্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ, স্কুলের মধ্যে শিক্ষককে বন্ধ করে রেখেছিলেন অভিভাবকরা। প্রাসনের হস্তক্ষেপে মুক্ত হন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
মঙ্গলবার স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিত হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল বেলা ১০টা নাগাদ। সেই সময় অতিক্রান্ত হয়। স্কুলের পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালীপদ সর্দার-সহ অন্যান্য কয়েকজন শিক্ষক বেলা ১১টার পর স্কুলের সামনে হাজির হন। অভিভাবকরা স্কুলের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের গোলাপ ফুলের পরিবর্তে জবা ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। অন্যদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে জেলাপরিষদ উপাধ্যক্ষক অনিমেশ মণ্ডল বলেন, “স্কুলের পঠনপাঠন লাঠে ওঠার জোগাড়। সঠিক সময় শিক্ষকরা স্কুলে আসেন না। অভিভাবকরা গোলাপ ফুলের পরিবর্তে জবাফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন শিক্ষকদের। এক প্রকার গান্ধীগিরি দেখিয়েছেন। এতে করে শিক্ষকরা যদি কিছুটা শুধরে যান, তাহলে ছাত্রছাত্রীরাই উপকৃত হবে।”