মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে। তার পর থেকেই নিজের শ্বশুরবাড়িতে একাধিকবার যৌন নির্যাতনের শিকার হলেন গৃহবধূ। অভিযোগের আঙুল সরাসরি উঠেছে তার শ্বশুরের দিকে। অভিযোগ, বারবার সুযোগ বুঝে শ্বশুর তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অভিযুক্ত এই ব্যক্তি। ঘটনাটি পূর্ব কলকাতার নারকেলডাঙা এলাকার।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা এই যুবতীর বাড়ি দিল্লিতে। সেখানে তাঁর বাবা-মা থাকেন। পরিবারের ইচ্ছায় তিনি বিয়ে করেন নারকেলডাঙার এক যুবকের সঙ্গে। স্বামী শিয়ালদার একটি দোকানে কর্মরত। আর শ্বশুরের পেশা সবজি বিক্রি। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে তাঁর দিনগুলো ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠতে থাকে। অভিযোগ অনুসারে, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শ্বশুর বারবার তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালায়। এই ধরনের ঘটনা একবার নয়, একাধিকবার ঘটেছে। এরফলে তাঁর মানসিক এবং শারীরিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে।
নির্যাতিতা যুবতী পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রতিবারই শ্বশুর কোনও না কোনও ছুতোয় তাঁকে ঘরে ডাকতেন। একদিন, দুপুরবেলা বাড়ি ফিরে এসে তিনি তেল মালিশের অজুহাত দেখিয়ে পুত্রবধূকে ডেকে পাঠান। যুবতী তেলের পাত্র নিয়ে ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করে দেন শ্বশুর। তারপর শুরু হয় অমানুষিক যৌন নির্যাতন। এই ঘটনার পর কোনওরকমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যুবতী ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি অসহায় অবস্থায় তার এক তুতো ভাইকে ফোন করে সমস্ত কথা খুলে বলেন। তাঁর ভাই তখনই পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পুলিশের জরুরি নম্বর ১০০-এ কল করেন।
প্রথমে বেলেঘাটা থানার পুলিশ যোগাযোগ করে। তারপর নারকেলডাঙা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। যুবতী তখন এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে বেলেঘাটা এবং নারকেলডাঙা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না। পুলিশ তাদের সন্ধান করে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে নারকেলডাঙা থানায় নিয়ে আসে। সেখানে মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর যুবতী অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবারই পুলিশ অভিযুক্ত শ্বশুরকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা যুবতী বিয়ের পর থেকে এই অত্যাচারের কথা তাঁর স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের জানানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারা সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে তাকে আরও হেনস্থা করে এবং হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করে।