হার্ট অ্যাটাক হলে প্রাথমিক চিকিৎসা কী? এবার স্কুলেই শিখবে পড়ুয়ারা
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ: হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর প্রাথমিক শুশ্রূষার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন)। জীবনদায়ী এই পদ্ধতি এবার শেখানো শুরু হল হাইস্কুলস্তরে। মঙ্গলবার ইংলিশবাজার শহরের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রদের হাতেকলমে সিপিআর দেওয়ার পদ্ধতি শেখালেন চিকিৎসক এবং কুইক রেসপন্স টিমের (কিউআরটি) সদস্যরা। মালদহ জেলা প্রশাসন এবং মাধ্যমিক শিক্ষাদপ্তরের উদ্যোগে শামিল হয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দপ্তর। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অনিন্দ্য সরকার, জেলা শিক্ষা আধিকারিক স্মৃতা সুব্বা, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস সহ বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক স্বামী তাপহরানন্দ এবং অন্যান্য শিক্ষকরা হাজির ছিলেন এই কর্মসূচিতে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, একজন মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তিকে প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারে এই সিপিআর। পথেঘাটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়া কোনও ব্যক্তিকে সিপিআর দিয়ে নতুন জীবনদান সম্ভব। জেলা প্রশাসনের সাহায্যে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক স্কুলের ছাত্রদের সিপিআর শেখানোর যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অভূতপূর্ব।
সিএমওএইচ জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সারা শরীরের সঙ্গে মস্তিষ্কেও রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। এমন মারাত্মক মুহূর্তে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট সময় থাকে ওই রোগীর হৃদযন্ত্রকে সিপিআর পদ্ধতিতে চালু করার। সকলের এই পদ্ধতি জানা থাকলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা কিছুটা কমানো যাবে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, মালদহে তো বটেই, সম্ভবত রাজ্যে স্কুলস্তরে এধরনের উদ্যোগ প্রথম। জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
প্রধান শিক্ষক স্বামী তাপহরানন্দ বলেন, জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক যখন এই শিবিরের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে তা গ্রহণ করেছি। এই শিবিরের মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হলে তা সমাজেরই কাজে লাগবে। আমাদের ছাত্ররা তার জন্য প্রস্তুত।
স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সৃজন প্রামাণিক, প্রিয়ম মণ্ডল, সরফরাজ ইসলাম, রৌনক সিট, ঋতধী দাস সহ অন্যরা বলে, বিষয়টি অত্যন্ত শিক্ষণীয়। আমরা সিপিআর সম্পর্কে আগে পড়েছি। কিন্তু কীভাবে সিপিআর দিতে হয়, তা আজ চাক্ষুষ করলাম। কখনও প্রয়োজন হলে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে মৃতপ্রায় হৃদরোগীকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করব।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস বলেন, আমাদের লক্ষ্য জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের এই পদ্ধতি সম্পর্কে আরও বেশি অবগত করা।
বঙ্গরত্ন শিক্ষাবিদ শক্তিপদ পাত্রের কথায়, মালদহে হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকাঠামো বা চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। তাই এই পদ্ধতি যত বেশি মানুষ জানবেন, ততই উপকার।