বার্থ সার্টিফিকেটের জন্য ৫০০ টাকা নিচ্ছে পঞ্চায়েত! ভাইরাল ভিডিও, অভিযোগ ওড়ালেন জগদীশপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: বার্থ সার্টিফিকেট নিতে লাগছে ৫০০ টাকা! সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের ২ নম্বর জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সেই ভিডিও (সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’) সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। আর তা নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধানরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও তৃণমূলের রায়গঞ্জ ব্লক-২ এর সভাপতি দীপঙ্কর বর্মন বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
কয়েক সেকেন্ডের সেই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একটি ঘরে ২ নম্বর জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে ঘিরে একদল গ্রামবাসী হইহট্টগোল করছেন। তাঁরা প্রশ্ন করছেন, বার্থ সার্টিফিকেট পেতে কেন ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে? উল্টোদিকে, পরিস্থিতি কোনওমতে সামাল দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও কয়েকজন পঞ্চায়েত কর্মী।
রায়গঞ্জ ব্লকের অধীন হলেও ২ নম্বর জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত হেমতাবাদ বিধানসভার অন্তর্গত। বর্তমানে পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে। প্রধানের দায়িত্ব রয়েছেন বিশ্বজিৎ বর্মণ এবং উপপ্রধান জিয়াতুল হক ওরফে জীবন। দু’জনেই তৃণমূলের সদস্য। বিতর্ক প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ ২ নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীপঙ্কর বর্মন জানান, বিরোধীদের এখন কোনও কাজ নেই। সিপিএমও ঘটনার সত্যতা যাচাই না করেই ভিডিও ভাইরাল করে শিরোনামে আসতে চায়। যে ভিডিও নিয়ে বিতর্ক, সেটা ছিল জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে একটি আলোচনার অংশ। তাও দিন দশেক আগের। উপপ্রধানও সেখানে ছিলেন। যেহেতু এনআরসি, এসআইআর নিয়ে মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন, তাই তৃণমূল তাঁদের পাশে থেকে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে। এসব বিষয়েই আলোচনা চলছিল। তখন অনেকেই ছিলেন। যারা মানুষের কোনও কাজ করে না, তারাই দূর থেকে ভিডিও করেছে। শেষে টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে মিথ্যা রটাচ্ছে। দীপঙ্কর বলেন, এধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা জানতে পারতাম। আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি চলছে। এব্যাপারে কারও অভিযোগ থাকলে, বাসিন্দারা সেখানেই সরব হতেন। কিন্তু কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। গোটাটাই চক্রান্ত।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হকের মন্তব্য, এসআইআর বিতর্কের পর সব পঞ্চায়েতেই বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য ভিড় বাড়ছে। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হয়রান হচ্ছেন। কারণ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি মানুষের সমস্যার সুযোগ নিয়ে বাড়তি টাকা রোজগারের পথ তৈরি করেছে। এসআইআর নিয়ে মানুষ বিভ্রান্ত। ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণে বিভিন্ন নথি পেতে মরিয়া সাধারণ মানুষ। এই সুযোগে তৃণমূল পঞ্চায়েতগুলি থেকেই বিভিন্ন অভিযোগ সামনে আসছে।
তবে, প্রধান ও উপপ্রধান বলেছেন, ভিডিও ঘিরে যে বিতর্ক হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। নিজস্ব চিত্র।