চাঁচলে পরিবহণ শ্রমিকদের সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা দিতে বিশেষ শিবির
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, চাঁচল: যানচালক, গাড়ির হেল্পাররা ব্যস্ততা ও না জানার কারণে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে আবেদন করেন না বলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর পর সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন। এমন পরিস্থিতি বদলাতে মঙ্গলবার চাঁচলের প্রশাসনিক ভবনে মহকুমা শ্রম দপ্তরের উদ্যোগে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে কয়েকশো পরিবহণ শ্রমিক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে আবেদন করতে ভিড় জমান। শ্রমিকদের প্রকল্পের সুবিধার কথা জানাতে হাজির ছিলেন মালদহ জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি রফিকুল হোসেন, শ্রম দপ্তরের উত্তরবঙ্গ জোনের অতিরিক্ত কমিশনার হীরালাল রায়, চাঁচলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায়, আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক বাসু কুমার দাস, চাঁচল ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি জাকির হোসেন সহ অন্যরা। পরিবহণ দপ্তরের উদ্যোগে সেখানে স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা শিবিরও করা হয়।
শ্রম দপ্তর সূত্রে খবর, প্রকল্পে নথিভুক্ত পরিবহণ শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে পরিবারকে এককালীন দুই লক্ষ টাকা ও স্বাভাবিক মৃত্যুতে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়। দুর্ঘটনায় শ্রমিক অক্ষম হলে সেক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়ে থাকে। এমনকী প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থও দেয় রাজ্য সরকার। নথিভুক্ত শ্রমিকের ৬০ বছর পূর্ণ হলে বা মৃত্যু হলে ফান্ডে থাকা টাকা দেওয়া হয়। পাশাপাশি, নথিভুক্ত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সন্তানের শিক্ষার ক্ষেত্রেও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এদিন শিবিরে সাতজন শ্রমিককে প্রকল্পের কাগজপত্র দিয়েছে শ্রম দপ্তর। পরিবহণ কর্মী ইন্দ্রজিৎ পাল বলেন, মনে হচ্ছে ভবিষ্যৎ কিছুটা হলেও সুরক্ষিত হল। ২০১০ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় এখনও পর্যন্ত চাঁচল মহকুমার ছ’টি ব্লকের মাত্র ৭ হাজার ২০০ জন পরিবহণ শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করেছেন। শ্রম দপ্তরের অনুমান, বাস্তবে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার কথা। তাই বিভিন্ন পরিবহণ সংগঠনকে আগাম বার্তা দিয়ে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়।
চাঁচল মহকুমা ট্যাক্সি ইউনিয়নের সম্পাদক পিন্টু আলি বলেন, সহকর্মীরা সময়ের অভাবে এতদিন আবেদন করেননি। সবাই একজোট হয়ে আবেদন করলাম। ছোট গাড়ির চালক আফাজ আলির কথায়, কোনও রকমে সংসার চালাই। অবসরের পর এককালীন ভাতা অনেকটা সাহায্য করবে। সহকর্মীর মুখে শুনেই সব কাজ পেলে শিবিরে আবেদন করলাম। চাঁচল মহকুমা শ্রম দপ্তরের সহকারী কমিশনার নৌসাদ আলি বলেন, এই প্রকল্পের সুবিধা পরিবহণ শ্রমিকদের প্রাপ্য। কিন্তু অনেকেই আবেদন করতে আসেন না বলে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে শিবিরের আয়োজন করা হয়। দপ্তরের পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমেও নিয়মিত আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এক পরিবহণ শ্রমিককে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে শংসাপত্র তুলে দিচ্ছেন চাঁচলের মহকুমাশাসক। চাঁচলের প্রশাসনিক ভবনে তোলা নিজস্ব চিত্র