নিউ ফরাক্কায় পাঁচ লক্ষ টাকার জালনোট উদ্ধার, এসটিএফ ও পুলিসের যৌথ অভিযানে সাফল্য
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: মুর্শিদাবাদের নিউ ফরাক্কায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার জালনোট সহ দুই কারবারি গ্রেপ্তার হয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ জাফর ও খালিদ শেখ। তাদের বাড়ি যথাক্রমে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে ও ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জে। তাদের কাছ থেকে জাল নোটগুলি পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পুলিসের। রাজ্য পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ও ফরাক্কা থানার পুলিস সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। কর্ণাটক ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ওই দুই যুবকের মধ্যে যোগসূত্র খতিয়ে দেখছে পুলিস। ফরাক্কা থানায় একটি মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
এপ্রসঙ্গে ফরাক্কার এসডিপিও শেখ সামসুদ্দিন বলেন, উদ্ধার হওয়া নোটগুলি সব ৫০০ টাকার। ধৃতদের কাছ থেকে মোট ৪লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে। নোটগুলি এতটাই নিখুঁত যে সেগুলি জাল নাকি আসল, তা বোঝা কঠিন। এই কারবারে আর কেউ জড়িত আছে কি না, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার বাংলাদেশ-সীমান্তবর্তী বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে ধৃতরা জালনোটগুলি সংগ্রহ করেছিল। তারপর সেগুলি বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। নোটগুলি হাত বদলের আগেই এসটিএফ তাদের পাকড়াও করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ নিউ ফরাক্কা বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালান পুলিস ও এসটিএফের আধিকারিকরা। একটি অটোকে থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। সেখানে দু’জন যাত্রীর কথাবার্তায় প্রচুর অসঙ্গতি লক্ষ্য করে পুলিস। তল্লাশি শুরু করলে তাদের ব্যাগ থেকে ৯৯৫টি জাল নোট পাওয়া যায়। পুলিসের চোখে ধুলো দিতে অটোয় চেপেছিল কারবারিরা। পুলিস এর আগে বহু কারবারিকে বাস ও রেলস্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাই অটোয় চেপে গেলে পুলিস ততটা সন্দেহ করবে না মনে করেছিল। যদিও তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় পুলিস।
জানা গিয়েছে, মূলত বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে জালনোট আসে। সেগুলি মালদহের বৈষ্ণবনগর ঘাট হয়ে মুর্শিদাবাদে ঢোকে। এদিনও একই কায়দায় জালনোট এই জেলায় ঢুকেছিল কি না, পুলিস তা খতিয়ে দেখছে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, কারবারিরা একাধিক বড় বাজারে মোটা টাকার লেনদেনের সময় আসল নোটের মাঝে সুকৌশলে জাল টাকা ঢুকিয়ে দেয়। এই ৫০০ টাকার জালনোটগুলি অবিকল আসলের মতোই দেখতে। হাতে নিয়েও ফারাক বোঝা যায় না।
ইতিপূর্বে জালনোট পাচার চক্রে বাংলা, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের একাধিক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তবে, কর্ণাটকের যুবকের জড়িত থাকার বিষয়টি ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ঝাড়খণ্ডের যুবকের সঙ্গেই বা তার কীভাবে পরিচয় হল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। কর্ণাটক ও ঝাড়খণ্ডের যুবকের যোগসূত্রের বিষয় নিয়ে এখনই কিছু স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি পুলিস। পাচারের কারবারের সূত্রেই তাদের পরিচয় বলে প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আরও তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস।-নিজস্ব চিত্র