আচমকা ভাবাদিঘিতে রেলের আধিকারিকরা, জল্পনা, দ্রুত কাজ শুরুর দাবি স্থানীয়দের
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: মাটি পরীক্ষার পর আচমকা ভাবাদিঘি রেল প্রকল্পের জায়গা পরিদর্শনে আসেন পূর্ব রেলের আধিকারিকরা। রেলের আধিকারিকদের পরিদর্শন ঘিরে আশার আলো দেখছেন বাসিন্দারা। এদিন আরপিএফের সঙ্গে রেলের দুই আধিকারিক ভাবাদিঘিতে আসেন। তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ ভাবাদিঘি এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে সেখান থেকে চলে যান। রেলের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, মাটি পরীক্ষার পর পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাথমিক পরিদর্শন করা হয়েছে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে, অ্যালাইনমেন্ট দেখা হয়েছে। এবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
উল্লেখ্য, প্রায় দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ভাবাদিঘিতে জমিজটের জেরে থমকে রয়েছে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথের কাজ। তারকেশ্বর থেকে গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চললেও ভাবাদিঘি থেকে কামারপুকুর পর্যন্ত অংশে রেলের কাজ আটকে রয়েছে। দিঘি বাঁচিয়ে রেললাইন করার আন্দোলন করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। যদিও এই ব্যাপারে মাস কয়েক আগে কলকাতা হাইকোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছে। তারপরই প্রশাসন ও রেলের তরফে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে আন্দোলনকারীদের। প্রশাসনের তরফে একাধিক প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। তারপরেই এদিনের পরিদর্শন।
তার মাঝেই ভাবদিঘি বাঁচাও কমিটির আন্দোলনকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের দাবি, আগাম কিছু না জানিয়েই এদিন পরিদর্শনে আসেন রেলের আধিকারিকরা। মাটি পরীক্ষার পর দীর্ঘদিন কোনও রকম যোগাযোগ বা বৈঠকও করা হয়নি। তার প্রতিবাদেই এদিন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, রেল ও রাজ্যের সঙ্গে আমাদের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত মতো আমরা বেশকিছু বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছি। সেইমতো জমি জরিপ, মাটি পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফে আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। মাস খানেক আগে মাটি পরীক্ষা হলেও তারপর কোনও রকম আলোচনা হয়নি। এদিন আচমকা রেলের পরিদর্শনে আমরা অন্ধকারে রয়েছি। আধিকারিকরা কী বিষয়ে পরিদর্শন করলেন তাও জানাননি। তাই ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। আমরা চাই আদালতের নির্দেশমতো কাজ হোক। এছাড়াও প্রয়োজনে বিচারপতিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে ভাবাদিঘির রেলের প্রকল্প নিয়ে তদন্ত করার দাবিও জানাচ্ছি।
আন্দোলনকারীদের দাবি, দিঘির উপর সেতু তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে রেলের তরফে। সেইজন্য ভাবাদিঘিতে কয়েকদিন ধরে মাটি পরীক্ষার কাজ চালায় রেল। তারপর এদিন আচমকা রেলের আধিকারিকরা ভাবাদিঘি পরিদর্শনে আসেন। ফলে সেখানে কী কোনও ধরনের নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে! তা নিয়ে নানা মহলে জল্পনা দানা বেঁধেছে। আন্দোলনকারীরা চান, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করুক রেল ও প্রশাসন। যদিও এপ্রসঙ্গে রেলের আধিকারিকরা সংবাদ মাধ্যমে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। -নিজস্ব চিত্র