ভট্টাচার্যবাড়ির রাজরাজেশ্বরী দুর্গা আরাধনার প্রস্তুতি শুরু
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের বনেদি ভট্টাচার্য পরিবারের দুর্গাপুজোর সুপ্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে। রামগোবিন্দ রোডের ভট্টাচার্য বাড়িতে শ্রীশ্রী রাজরাজেশ্বরী দুর্গামাতার পুজো হয়। প্রথা মেনে জগন্নাথের রথযাত্রার দিন কাঠামো ও বেদি পুজোর মাধ্যমে এই দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাড়ির দুর্গামণ্ডপে দেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে। সপ্তমী থেকে নবমী অবধি দুপুরে দেবীর ভোগে অন্ন, খিচুড়ি, পুষ্পান্ন, পরমান্ন, নানাবিধ ভাজা, তরকারি, ফল ও মিষ্টি দেওয়া হয়। রাতে ভোগে থাকে লুচি, সুজি, মালপোয়া ও নানা মিষ্টি।
আগে পুজোর সময় ভট্টাচার্য বাড়িতে কবিগানের আসর, যাত্রাপালা বসত। পুজোয় মহিষ বলিও হতো। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। বিজয়া দশমীতে দেবীর পুজো শেষে কুলাচার মেনে অপরাজিত পুজো হয়। স্বর্গীয় পঞ্চানন ভট্টাচার্যের আমলে পাকাটোল রোডের বাড়িতে দুর্গাপুজো আরম্ভ হয়েছিল। তাঁর পরবর্তী দুই পুরুষ অবধি পুজো চলে।
সেসময় মহিষবলি, যাত্রা ও কবিগানের আসর হতো। দশমীতে দুর্গাপ্রতিমা বেহারার কাঁধে চাপিয়ে ঢাকের বাদ্যি সহ গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হতো। পরে দীর্ঘকাল পুজো বন্ধ ছিল। অবশেষে এই পরিবারের স্বর্গীয় তরুণ ভট্টাচার্যের বড় ছেলে অতনু ভট্টাচার্য ২০১২সাল থেকে পাকাটোল রোডের বাড়িতেই পুজো শুরু করেন। পরে ২০১৭সাল থেকে রামগোবিন্দ রোডের বাড়িতে এই পুজো হচ্ছে।
এখন আর কবিগান বা যাত্রাপালার আসর, ধুনুচি নাচ হয় না। বলি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। তবে দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জন শেষে একাদশী তিথিতে বাড়ির উঠোনে আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বৈঠকী আড্ডা হয়। দশমীতে পুজো শেষে একাধিক ঢাক সহযোগে শোভাযাত্রা করে ভাগীরথীতে প্রতিমা নিরঞ্জন দেওয়া হয়। তবে এখন আর বেহারার কাঁধে বিসর্জন হয় না।
অতনু ভট্টাচার্য বলেন, এখনও নিয়ম মেনে পাকাটোল রোডের আদি বাড়ি থেকে শতাব্দীপ্রাচীন বোধন করা বেলগাছের ডাল নিয়ে আসি। সেই বিল্ববৃক্ষের পুজো ও দেবীর বোধন করা হয়। ষষ্ঠীতে দেবীর সামনে প্রাচীন যোগনাথ শিব এবং বুড়োশিবের পুজোর পর দেবীর পুজো শুরু হয়। ভট্টাচার্য পরিবারের বধূ সোহিনী ভট্টাচার্য বলেন, পরিবারের নিয়ম অনুসারে এই পুজোয় আমরা নির্দিষ্টভাবে কাউকে নিমন্ত্রণ করি না। তবে মায়ের পুজোয় সবাই স্বাগত।