বড়লোক হওয়ার লোভে মালিকের টাকা লুট করতে লরির খালাসিই ডেকেছিল দুষ্কৃতীদের, স্বীকার জেরায়, ধৃত ৩, উদ্ধার ৫০ হাজার টাকা
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভে লরির মালিককে জঙ্গলে আটকে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা লুটের পরিকল্পনা করেছিল খালাসি শামিম রহমান মণ্ডল। জয়পুরে ছিনতাইকাণ্ডে ধৃতকে জেরা করে এ তথ্য জানতে পেরেছে পুলিস। জয়পুরের শালতোড়া গ্রামের বাসিন্দা শামিমের দুই সঙ্গীও ধরা পড়েছে। তাদের নাম মুজিবর মোল্লা ও নুরনবী খান। মুজিবরের বাড়ি শালতোড়া গ্রামেই। নুরনবীর বাড়ি গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গ্রামে। ধৃতদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার ধৃতদের নিয়ে বিষ্ণুপুর থানায় সাংবাদিক সম্মেলনে এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, ছিনতাইয়ের গোটা পরিকল্পনা করেছিল শামিম রহমান মণ্ডল। সে মালিকের গাড়িতে বসেই সঙ্গী দুষ্কৃতীদের যাত্রাপথের সমস্ত খবর পৌঁছে দিয়েছিল। দলটিতে মোট ৬ জন ছিল। তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা গিয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। অন্য তিন দুষ্কৃতীর কাছে বাকি টাকা রয়েছে। তাদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কোতুলপুরের লেগো গ্রামের বাসিন্দা বিমান মণ্ডলের লরির ব্যবসা রয়েছে। তাঁর পুরনো খালাসি অসুস্থ থাকায় শালতোড়া গ্রামের বাসিন্দা শামিম রহমান মণ্ডলকে অস্থায়ীভাবে খালাসি নিযুক্ত করেন। কয়েকদিন আগে তাঁর একটি লরিতে করে ভিনরাজ্য থেকে কুমড়ো এনে বিষ্ণুপুরের পিয়ারডোবায় খালি করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় বিমান ভাড়ার টাকা নিতে পিয়ারডোবায় যান। লরির চালকের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ ৯২ হাজার টাকা নেন। টাকাপয়সা লেনদেন শামিমের চোখের সামনেই হওয়ায় সে লোভ সামলাতে পারেনি। এরপরেই সে পরিচিত দুষ্কৃতীদের খবর দেয়। নিজে মালিকের গাড়িতে করে বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করে। শামিমের কথামতো দূরত্ব কম হবে বলে গাড়ির মালিক বিমানবাবু মেন রাস্তা ছেড়ে জঙ্গলের রাস্তা ধরেন। তাঁদের গাড়ি রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জয়পুরের বালিগুমা গ্রাম পেরিয়ে জবা জঙ্গলে ঢুকতে শামিমের পরিচিত দুষ্কৃতীরা রাস্তায় পাথর ফেলে গাড়ি আটকে দেয়। বিমানবাবুকে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে গাড়ি ভাড়ার টাকা সহ তাঁর কাছে থাকা আরও ৪২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। শামিমও লুটের টাকার ভাগ নিতে ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। এটাই ছিল শামিমের ভুল। বিমানবাবু বুঝতে পারেন যে, মূল পরিকল্পনা শামিমেরই। এরপর বিমানবাবু জয়পুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস তদন্তে নামে। প্রথমেই শামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর নুরনবী ও মুজিবরকে গ্রেপ্তার করা হয়।