বাইকে চেপে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে মাদক ডেলিভারি নদীয়া থেকে কলকাতা আসার পথে গ্রেপ্তার ২
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুলেট বাইকে চেপে হেরোইন পাচার। অভিনব পন্থায় পুলিসের চোখে ধুলো দিয়ে গত ৬ মাস ধরে চলছিল পাচারচক্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার গভীর রাতে এসএসকেএম হাসপাতালের পোস্ট অফিস গেটে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। সেখানে দুই যুবককে আটক করে তল্লাশি চালায় নারকোটিক সেল। তাদের কাছ থেকে মেলে প্রায় ৭৩০ গ্রাম হেরোইন। এই নিষিদ্ধ মাদকের বাজারমূল্য প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পেরেছে, নদীয়ার পলাশি থেকে নিষিদ্ধ মাদক নিয়ে এসে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পাচার করত তারা।
পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শুভঙ্কর পাঁজা ও সৌরভ প্রধান। দু’জনেই পর্ণশ্রী থানা এলাকার বাসিন্দা। তারা একযোগে হেরোইন পাচারচক্রে যুক্ত হয়। শনিবার কলকাতা থেকে নদীয়ায় যায় দু’জন। বুলেট বাইকে চেপেই যায় তারা। দু’বছর আগে বাইকটি কেনা হয় শুভঙ্করের দাদার নামে। সোমবার দুপুরে নদীয়া থেকে বিপুল পরিমাণ হেরোইন ডেলিভারি নেয় দুই বন্ধু। পরিকল্পনা ছিল সেগুলি কলকাতায় এনে পর্ণশ্রীতে রাখার। এরপর তা শহরের বিভিন্ন ড্রাগ মাফিয়ার হাতে পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য ছিল তাদের। কিন্তু, পাচারকারীদের পরিকল্পনায় বাধ সাধে কলকাতা পুলিসের নারকোটিক সেল। গোপন সূত্রে পুলিস খবর পায়, দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে ডিএল খান রোড, এক্সাইড হয়ে বেহালার দিকে যাবে দুই অভিযুক্ত। সেই মতো এসএসকেএমের পোস্ট অফিস গেটের কাছে ফাঁদ পাতে গোয়েন্দা বিভাগ। বাইকের নম্বর আগেই হাতে পেয়ে যায় পুলিস। রাতে সেই বাইককে দেখতে পেয়ে আটকান গোয়েন্দারা। বাইক আরোহীর পিঠে ছিল কালো ব্যাগ। সেই ব্যাগ হাতড়াতেই বেরিয়ে আসে কাপড়ে মোড়া নেশার উপাদান। বাজেয়াপ্ত করা হয় নিষিদ্ধ মাদক। ধৃতদের কাছ থেকে মিলেছে, তিনটি মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু টাকা।
পুলিস জানিয়েছে, এই দুই অভিযুক্ত আগেও বার দু’য়েক পুলিসের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। বাইকে চেপেই নদীয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে হেরোইন, গাঁজা সহ নিষিদ্ধ মাদক নিয়ে আসত পর্ণশ্রীর এই দুই যুবক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া দু’টি মোবাইল তাদের নিজেদের। তৃতীয় মোবাইলটি ব্যবহার করা হয় মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। সেই মোবাইল থেকে ‘হেরোইন হ্যান্ডলারদের’ খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিস। পাশাপাশি, নদীয়ায় ওই হেরোইন তাদের কে দিল, তার খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।