শ্যামগোপাল রায়
শুধু বৃষ্টি বা তাপমাত্রা নয়, এ বার আগাম জানা যাবে বাতাসের গুণগত মানও।শীতকালে বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা মাথায় রেখে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ চালু করতে চলেছে সাত দিনের আগাম এই পূর্বাভাস ব্যবস্থা।
প্রথম ধাপে রাজ্যের ছ’টি দূষণপ্রবণ শহরে তা চালু হবে। পরে বাকি আরও শহরেও এই যন্ত্র বসবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদের এক কর্তা। জাতীয় পরিচ্ছন্ন বায়ু কর্মসূচি (এনক্যাপ)-এর আওতায় দেশের ১৩৫টি দূষণপ্রবণ শহরের তালিকায় রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর, আসানসোল, দুর্গাপুর ও হলদিয়া। লক্ষ্য — ২০২৬–এর মধ্যে শহরগুলিতে পিএম–১০ এর মাত্রা ৪০ শতাংশ কমানো।
পর্ষদের দাবি, ইতিমধ্যেই কিছু শহরে উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যেমন, হলদিয়ায় পিএম–২.৫ এর মাত্রা নেমেছে ৩৮-এ, যা অনুমোদিত সীমার (৪০) নীচে। এর ফলেই বাতাসের গুণমানের নিরিখে হলদিয়া জায়গা করে নিয়েছে দেশের সেরা দশটি উন্নত শহরের তালিকায়। পর্ষদের ২০২৪-’২৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে খোলা আকাশের নীচে দূষণের ২৬,৭৪৮টি জ্বলন্ত উৎস চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯,৭২১টিই কৃষি ফসলের আবর্জনা পোড়ানো সংক্রান্ত।
সূত্রের খবর, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্য দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ হাত মিলিয়েছে বেঙ্গালুরুর এক বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে। বাতাসের গুণগত মানের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে পরিবেশ দপ্তরের অ্যাপ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মাধ্যমে। সাধারণ মানুষ থেকে পুরসভা বা পরিবহণ দপ্তর, পুলিশ — সকলকেই এর মাধ্যমে আগাম সতর্ক করা যাবে।
পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘শীতে দূষণের মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায় বলে তখনই এই পরিষেবা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। আগাম সতর্কতা থাকলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।’ আগাম সতর্কতায় সুবিধে কী? পরিবেশবিজ্ঞানী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে শুধু পরিমাপ নয়, পূর্বাভাসও অত্যন্ত জরুরি। তাতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হয়।’