• বন্ধকী ব্যবসায় বড় ধাক্কা, ভর সন্ধ্যায় বন্দুক ঠেকিয়ে লুট করা হল সমস্ত সোনা...
    আজকাল | ২০ আগস্ট ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভর সন্ধ্যেবেলায় জনবহুল এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটল। নদিয়ার চাকদহ থানার অন্তর্গত লালপুর, চাকদহ বনগাঁ রোডের একটি ব্যাঙ্কে দুই মুখোশধারী দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে এবং আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ব্যাঙ্কের সোনা লুট করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।

     প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, সন্ধ্যা প্রায় ছ’টা নাগাদ দুই দুষ্কৃতী হঠাৎ ব্যাঙ্কে প্রবেশ করে এবং সদর দরজার শাটার নামিয়ে দেয়। এরপর আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কর্মীদের ভয় দেখিয়ে ব্যাঙ্কের ভিতরে থাকা সমস্ত সোনার গয়না দুটি ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, ব্যাঙ্কটি মূলত বন্ধক রাখা সোনার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করে থাকে।

    ঘটনার সময় ব্যাঙ্কের ভিতরে চারজন কর্মী উপস্থিত ছিলেন। দুষ্কৃতীরা পালানোর আগে বাইরে থেকে শাটার নামিয়ে দেয়। ফলে ব্যাঙ্কের কর্মীরা বাইরে যোগাযোগ করতে না পেরে কিছু সময় আটকে পড়েন।

    পরবর্তী সময়ে ঘটনার খবর জানাজানি হয়। চাকদহ থানায় ফোন করা হয়। থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং কর্মীদের উদ্ধার করে। কিছুক্ষণ পরেই রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার আশীষ কুমার মৌর্য ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।

    তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'ব্যাঙ্কটিতে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া হয়। সেই সোনাই লুট করেছে দুষ্কৃতীরা। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।'

    ঠিক কত মূল্যের সোনা বা সম্পদ খোয়া গিয়েছে, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এই ডাকাতির ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

    ডাকাতির ঘটনা ঘটার পর ব্যাঙ্কের নিচে অবস্থিত একটি মোবাইল ফোন মেরামতি দোকানের মালিক বাপি দাস বলেন, 'প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় এখানে প্রচুর লোকজন চলাফেরা করেন। ভাবতেও পারিনি এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এখনও যেন কীরকম একটা লাগছে!' তিনি বিকেল চারটে নাগাদ দোকান বন্ধ করে চলে যান। পরে লোকের মুখে খবর শুনে তড়িঘড়ি ফিরে আসেন।

    যদিও এই ধরনের ডাকাতির ঘটনা এটিই প্রথম নয়। একাধিক উদাহরণ আছে। এর আগে ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রানাঘাটে একটি গয়নার দোকানে ভর দুপুরে ৬ থেকে ৭ জনের একটি ডাকাত দল কয়েক কোটি টাকার গয়না লুট করেছিল। তবে তখন পুলিশের গুলিতে এক দুষ্কৃতী নিহত হয়। খোঁজ চালিয়ে বাকিদের ধরতে সক্ষম হন স্থানীয়রা।

    চাকদহের এই ঘটনায় স্থানীয়রা মধ্যেও ভীতির সঞ্চার হয়েছে। তাঁদের মতে, যেভাবে এরকম একটি জনবহুল এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেল তাতে এটাই প্রমাণ হয় দুষ্কৃতীরা কতটা বেপরোয়া! প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একজন দুষ্কৃতী টুপি ও মুখ ঢাকা অবস্থায় স্টেশনের দিক থেকে পায়ে হেঁটে এসেছিল এবং ডাকাতির পর ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকে বাইকে করে পালিয়ে যায়। পুলিশের অনুমান, ডাকাতির আগে দুষ্কৃতীরা এলাকায় ঘুরে সবদিক দেখে গিয়েছিল। 

    বর্তমানে পুলিশ গোটা এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। জায়গায় জায়গায় চলছে নাকা চেকিং।
  • Link to this news (আজকাল)